/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/Chandannagar-Light.jpg)
থিমভাবনায় চমক শ্রীভূমির, মায়াবী আলোকসজ্জায় তাক লাগাবে, আশায় চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। গ্রাফিক্স- কাঞ্চন ঘোষ
একটা মাত্র আলোকসজ্জা, হৈ-হৈ কাণ্ড ফেলেছিল কলকাতায়। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং বুর্জ খলিফার কথাই বলছি। সন্ধ্যের মায়াবী আলোকসজ্জার চমকে মেতে উঠেছিল খাস কলকাতা। এমন চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা অবাক করেছিল আপামোর শহরবাসীকে। আর সেই আলোকশিল্পের কাণ্ডারি চন্দননগরের বাবু পাল। করোনা কাটিয়ে এবারের পুজোয় ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। গত বছরের আলোকসজ্জাকে টেক্কা দিতে মরিয়া শিল্পীরা। খাস কলকাতার বুকে ‘ভ্যাটিক্যান সিটিকে’ মায়াবী আলোয় সাজিয়ে তুলতে বাবু পালের কর্মশালায় এখন রীতিমতো কর্মযজ্ঞ চলছে। দম ফেলার জো নেই শিল্পীদের।
প্রতি বছর আশ্বিন মাসে দেবী দুর্গার আগমনকে কেন্দ্র করে সেজে ওঠে শহর কলকাতা। উৎসবের দিনগুলিতে রাতের মহানগরীকে সাজিয়ে তোলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম চন্দননগরের আলোকশিল্পী বাবু পাল। গত বছর পুজোয় কলকাতার সেরা চমক ছিল লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের বুর্জ খলিফা। সেই মায়াবী আলো মুগ্ধ করেছিল পুজো দেখতে আসা সকল দর্শনার্থীকে। আলোকসজ্জার সেরা চমকে মেতে উঠেছিল শহরবাসী। এবার শ্রীভুমি স্পোর্টিং ক্লাবের চমক ‘ভ্যাটিক্যান সিটি’। গত বছরের মতো এবারেও আলোকসজ্জার গুরুদায়িত্ব যে মানুষটির কাঁধে তিনি আর কেউ নন চন্দননগরের সেই পরিচিত বাবু পাল।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/cats-145.jpg)
এবারেও আলোর জাদুতে দর্শক টানতে দিনরাত প্রাণপাত করছেন আলোকশিল্পীরা। দীর্ঘ দু’বছর করোনার দাপটে সেভাবে অর্ডার না থাকায় প্রবল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের। আর এবার করোনা দাপট কম থাকায় পুজো নিয়ে আশাবাদী আলোশিল্পীরা। চন্দননগরের আলোক শিল্পের জগৎজোড়া নাম। কলকাতা শারদোৎসবে প্রতি বছর নিত্যনতুন আলোকসজ্জায় চমক দেন চন্দননগরের শিল্পীরা। আর এবারেও তার ব্যতিক্রম নেই। উল্লেখ্য, চন্দননগরে রেজিস্টার্ড ৮২৫ জন আলোক ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে ৪০ হাজার মানুষ যুক্ত।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/cats-141.jpg)
করোনা কালে কাজ তেমন না থাকায় অনেকেই এই পেশা ছেড়েছেন ফলে এবারের পুজোয় অর্ডার ভাল থাকলেও কর্মী সংকটের কারণে চিন্তায় রয়েছেন আলোক ব্যবসায়ীরা। প্রখ্যাত আলোকশিল্পী বাবু পালের কথায়, “গত বছরের থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। অর্ডার ভালই আসছে তবে অনেকেই করোনাকালে কাজ ছেড়েছেন। ফলে কর্মী সংকট এখনও রয়েছে। ফলে ঠিক সময়ে অর্ডার দেওয়াটাই এবছর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ”।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/cats-144.jpg)
গত ২ বছর সব কিছু ওলটপালট করে দিয়েছ অতিমারি! বিধি মেনে উৎসব পালিত হয়েছে নমো নমো করে। এ বছর যেন পুরনো মুডে ফেরা। হারানো সুর ফিরে পাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে পাড়ায় পাড়ায়। দুর্গাপুজোর আঁতুড়ঘর কুমোরটুলি। একই সঙ্গে আলোক শিল্পীদের ব্যস্ততাও চোখে পড়েছে। চন্দননগরের যে সমস্ত আলোর কারিগররা আছেন তাদের মধ্যে বোরো চাঁপাতলার বাবু পালের নাম একেবারে প্রথম সারিতে।
বাবু পালের কর্মশালায় এখন রীতিমতো কর্মযজ্ঞ চলছে। জনা ২০ শিল্পী দিন-রাত এক করে কাজ করে চলেছেন। এবারও লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোটিং ক্লাবের আলোকসজ্জার বরাত পেয়েছেন বাবু পাল। এবার সেখানকার থিম ভ্যাটিক্যান সিটি। শুধু শ্রীভূমি নয় মুর্শিদাবাদের অন্যতম বড় পুজো বেলডাঙ্গা বারোয়ারিতেও যাচ্ছে চন্দননগরের আলো।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/cats-142.jpg)
বাবু পালের কর্মশালার সবচেয়ে অভিজ্ঞ শিল্পী পলাশ পাত্র। তাঁর কথায়, “বাজার এখন আগের থেকে চাঙ্গা। অন্তত কিছু শ্রমিক কাজ পাচ্ছেন। হয়তো আগের মতো কাজের ব্যাপ্তি নেই তবে আমরা অপেক্ষায় আছি। জেলায় জেলায় পুজো কার্নিভালের জন্য। প্রশাসন অনুমতি দিলে আবার আমরা আলোর ভেলকি দেখাবার উদ্যম পাব। কাজেও গতি আসবে। আর কলকাতাকে সাজাতে প্রতি বছরের মতো এবারেও থাকছে কিছু সেরা চমক, শ্রীভূমি আবারও আলোর জাদুতে টেক্কা দেবে শহর কলকাতার সকল পুজোকে”।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/cats-147.jpg)
বাবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবারের পুজোর আলোকসজ্জার পুরো দায়িত্বই কাঁধে তুলে নিয়েছেন মেয়ে সুশ্বেতা পাল। তাঁর কথায়, “পুজোয় এবারের বাচ্চাদের ওপর একাধিক থিম থাকছে। মুর্শিদাবাদ, শ্রীভুমি, রানাঘাটেও আলো যাচ্ছে। ভ্যাটিক্যান সিটির ওপর একাধিক গেট যাচ্ছে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে। পরীদেরও ফুটিয়ে তোলা হবে আলোর মাধ্যমেই। করোনার সময়ও কাজ বন্ধ হয়নি। তবে আগের তুলনায় এবারের বাজার বেশ কিছুটা ভাল। অতিমারি কালে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন অনেকেই। যাঁরা আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ‘ডিজনি ওয়ার্ল্ড’ এবারের পুজোর আমাদের সেরা আকর্ষণ”।