Zoological Park: বাঘ, ভালুক, হাতি, গন্ডার সবই রয়েছে। অভাব ছিল শুধু পশুরাজের। জঙ্গলে রাজা থাকবে না, এটা আবার হয় নাকি! সেই অভাবও পূরণ হতে চলেছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে (Bengal Safari Park, Siliguri)। পরিকল্পনামাফিক সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহেই শিলিগুড়িতে আসছে ত্রিপুরার সিংহ। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার সিপাইজলা চিড়িয়াখানা (Sepahijala Zoological Park) থেকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারির উদ্দেশ্যে সড়কপথে রওনা দিয়েছে দুটো করে সিংহ (Lion) এবং সঙ্গে আসছে চশমামুখো বাঁদর (Monkey)। চলতি মাসের ১১ তারিখ সাফারি পার্কে পৌঁছানোর কথা রয়েছে পশুরাজ ও বাঁদরদের। সেইমতো প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
সিংহ এবং চশমামুখো বাঁদরের জন্য এনক্লোজার (enclosure) তৈরির কাজ শেষ। সিংহ জুটিকে প্রথমে কিছুদিন কোয়ারান্টিনে (Quarantine) রাখা হবে বলে চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপর তাদের জনসমক্ষে ছাড়া হবে। রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরী জানিয়েছেন, ত্রিপুরার (Tripura) দুটি সিংহকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারিতে রাখার জন্য যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি পার্কে সমস্ত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, অ্যানিমাল এক্সচেঞ্জ প্রক্রিয়ায় ত্রিপুরার সিপাইজলা চিড়িয়াখানা থেকে দুটি সিংহ আনা হচ্ছে শিলিগুড়ির (Siliguri) বেঙ্গল সাফারি পার্কে (Bengal Safari Park)। তার বদলে এখান থেকে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger), দুটি লেপার্ড (Leopard) সহ বেশ কিছু বিদেশি পাখি পাঠানো হয়েছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাফারি পার্ক থেকে ওই প্রাণীগুলিকে ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা করানো হয়। পাঁচ তারিখ বিকেলে সেখানে পৌঁছে গিয়েছে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে যাওয়ার জন্য গত ২৯ জানুয়ারি সিপাইজলা চিড়িয়াখানার একটি প্রতিনিধিদল এসেছিল বেঙ্গল সাফারিতে।
আরও পড়ুন- Farming: বেকাররা এখবর আগে পড়ুন! অল্প দিনেই উপচে পড়া আয়, এব্যবসায় পাশে দাঁড়াচ্ছে সরকার
আসছেন পশুরাজ।
বেঙ্গল সাফারি পার্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, সিংহের জন্য একটি পৃথক এনক্লোজার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে পানীয় জল থেকে শুরু করে গরমকালের জন্যে ছোট ছোট গর্ত রাখা হচ্ছে। সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়েছে ওই গর্তগুলো। গরমের সময় সেখানে জল দেওয়া হবে, যাতে সিংহগুলো শরীর ভিজিয়ে নিতে পারে।
একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী সিংহ আনা হচ্ছে। সাধারণত পুরুষ সিংহ দিনে অন্তত সাত কেজি গোরু কিংবা মোষের মাংস খায়। স্ত্রী সিংহের প্রয়োজন হয় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কেজি মাংস। এখানেও প্রতিদিন সেই খাবার দেওয়া হবে। সাধারণ সময় তিন থেকে চার লিটার পানীয় জল প্রয়োজন সিংহদের। সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঠান্ডার জন্য রুম হিটার থাকছে। পাশাপাশি শিলিগুড়িতে আসার পর কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার বেশি দেওয়া হবে। তবে যাত্রাপথে যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য চিকিৎসক এবং লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম (Life-support system) সমেত অ্যাম্বুল্যান্স রাখ হয়েছে। শিলিগুড়িতে আসার পর সিংহদ্বয়ের দেখাশোনার জন্যে দুজন কর্মীও নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে সিংহ আনার প্রক্রিয়া চলছে। মাঝে একবার অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় জু অথরিটির কাছে আবেদন করেছিল বেঙ্গল সাফারি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কাগজপত্রে খামতি থাকায় সেগুলি ফেরত পাঠানো হয়। এরপর সমস্ত কাগজপত্র ঠিক করে ফের আবেদন জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় জু অথরিটি। সেইমতো ত্রিপুরার সিপাইজলা চিড়িয়াখানা থেকে সিংহ আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়।