ট্র্যাক চেঞ্জের সময় একই লাইনে চলে আসা মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কায় লাইনচ্যুত হয় যাত্রীবাহী ডাউন ব্যান্ডেল লোকাল। বুধবার রাত ৯. ১৬ মিনিট নাগাদ ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় স্টেশনের কাছে। দুর্ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর না থাকলেও ব্যান্ডেল লোকালের যাত্রীরা যথেষ্টই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছোন রেলের আধিকারিকরা। তাঁদের উপস্থিতিতেই শুরু হয় ল্যানচ্যুত বগি টেনে তোলার কাজ। তবে বুধবার রাতে তেমন কাজের অগ্রগতি না হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে লাইনচ্যুত লোকাল ট্রেনের বগি দুটিকে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত বগি ছাড়া মালগাড়ির বগিগুলিকেও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দীর্ঘ ১১ঘন্টা পর ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চালু করা গিয়েছে। ডাউন বালিয়া-শিয়ালদহ এক্সপ্রেসকে ডাউন লাইন দিয়ে গন্তব্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্তও ডাউন বর্ধমান- হাওড়া লাইনে পরিষেবা ব্যাহতই রয়েছে। এদিকে, বুধবার রাতের ওই দুর্ঘটনার জন্য লোকাল ট্রেনের চালককেই প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। লোকাল ট্রেনের চালকের ভুলেই দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে রেল। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, ইএমইউ লোকালের চালক সিগন্যাল ভেঙেছেন। যার জেরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
৩৭৭৮৪ ডাউন বর্ধমান - ব্যান্ডেল লোকাল ট্রেনটি বুধবার রাত ৯. ১৬ মিনিট নাগাদ শক্তিগড় স্টেশনে ঢুকছিল। সেই সময়ে ট্রেনটির দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটির গতি কম থাকায় বড়সড় কোনও বিপত্তি ঘটেনি। কোনও যাত্রীর হতাততের ঘটনা ঘটেনি। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই রেলওয়ে ডিভিশনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।লাইনচ্যুত ট্রেনের বগি লাইনে তোলার কাজ রাতেই শুরু করা হয়। এই দুর্ঘটনার প্রভাব পড়েছে বর্ধমান হাওড়া ডাউন লাইনে ।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ডাইন ব্যান্ডেল লোকালের যাত্রী শুভঙ্কর হালদার বলেন, “আমরা বর্ধমান থেকে ট্রেনে হাওড়া যাচ্ছিলাম। শক্তিগড় প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে ট্রেনের গতি কমে যায়। ওই সময়ে আমরা ট্রেনে বসেই ঝাঁকুনি অনুভব করি । তারপর ট্রেনের কামরার দরজা থেকে বাইরের দিকে মুখ বাড়িয়ে দেখি ট্রেনের সামনের দিকের একটা বগি লাইনচ্যুত হয়ে গেছে।" ওই যাত্রীর কথায়, "ট্রেন ধীরে চলছিল বলে বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি। কোন হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। ট্রেনের গতি বেশি থাকলে হয়তো অনেক বড় বিপদ ঘটে যেত।"
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শক্তিগড় থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে সবিস্তার খতিয়ে দেখে। পরে পুলিশ অফিসার মনোজ দত্ত বলেন, "ঘটনাস্থলে এসে দখলাম একই লাইনে মালগাড়ি ও লোকাল ট্রেনটি ঢুকে পড়াতেই বিপত্তি ঘটেছে। মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগাতেই লোকাল ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি। হতাহতের খবর নেই। কোনও যাত্রী জখম হয়েছেন, এমন খবরও পাওয়া যায়নি।"