করোনার জেরে এখনও লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। যার জেরে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়ছেন ফি দিন। পুজোর মুখে উদ্বেগ চরমে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, তমলুক, মহিষাদল-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার পদ্মচাষিদের। বছরের এই সময়টাতেই পদ্ম ফুলের চাহিা থাকে তুঙ্গে। দেবী দুর্গার পুজোয় লাগে পদ্মফুল। মাসের পর মাস পদ্মফুল চাষ করে আশ্বিন মাসে তার বিক্রি বাড়ে। তবে এবারও পুজোর মুখে লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় পদ্মচাষিরা। গ্রাম থেকে শহরাঞ্চল বা অন্যত্র কীভাবে পদ্মফুল নিয়ে যাবেন তাঁরা? দুশ্চিন্তায় বহু পরিবার।
চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন পদ্ম চাষিরা। সামনেই দুর্গাপুজো। গত বছর থেকে একটানা লকডাউনের জেরে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে রাজ্যজুড়ে। সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কায় এখনই লোকাল ট্রেন পরিষেবা পুরোদমে চালুর পক্ষে নয় রাজ্য। এদিকে, গত বছর টানা লকডাউনে এমনিতেই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে একাধিক ব্যবসায়। পূর্ব মেদিনীপুরে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাপট দেখিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ইয়াস ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি জেলার চাষাবাদে।
পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মূলত ট্রেনেই পদ্মফুল নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা শহরের বাজারগুলিতে। গত বছর থেকে সেই সুযোগ প্রায় বন্ধ। অনেকেই গড়ি ভাড়া করে পদ্মফুল কলকাতার বাজারগুলিতে পাঠাচ্ছেন। তবে তাতে লাভ ঠেকছে তলানিতে। পাঁশকুড়ার পদ্মচাষী হারাধন অধিকারী জানান, ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা একটা সিজনে লাভের আশা থাকে পদ্মচাষিদের। গত ২ বছর ধরে তা মিলছে না। অনেকেই টাকা ধার করে চাষ করেছেন। তাঁদের সাবারই মাথায় হাত পড়েছে।
ওই চাষির আরও আক্ষেপ, "ইয়াসে চরম ক্ষতি হয়েছে। পাতা নষ্ট হয়েছে। এখন আবার ট্রেন চলাচল বন্ধ। এই ফুল মূলত কলকাতা ও তার আশেপাশের এলাকার বাজারে বিক্রি হয়। শ্রাবণ মাসে অবাঙালিদের পুজো থাকে। ফুল কলকাতায় নিয়ে গেলে তবেই বাজার পাওয়া যায়। ট্রেন বন্ধ রয়েছে। গাড়িতে কলকাতায় ফুল নিয়ে যেতে ৫ হাজার টাকা ভাড়া গুণতে হয়।"
আরও পড়ুন- নিম্নচাপের জেরে আজও দিনভর দুর্যোগ, একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
আর এক ফুল চাষী ব্রজবিহারী দাস জানান, পদ্ম চাষ শুরু হয় চৈত্র মাস থেকে। চাষ চলে দুর্গাপুজো পর্যন্ত। যাতায়াতে সমস্যার কারণে ফুল পচে যাচ্ছে। বাজারও মন্দা। এই ফুল ১৫ দিনের বেশি ভালো থাকে না। এখন মাত্র ২ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে পদ্ম ফুল। প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে তাই সরকারি সাহায্যের দাবি পদ্মচাষিদের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন