Malda Habibpur vote and hunger strike: মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের হবিবপুর ব্লকের রাধাকান্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। মঙ্গলবার অন্যান্য জায়গার মত এখানেও লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু, সকাল ৭টা থেকে বুথে বসে কার্যত মাছি তাড়ালেন ভোটকর্মীরা। একজন ভোটারও বুথে গেলেন না। ফাঁকা বুথের সামনেই প্রস্তুত অবস্থায় অস্ত্র হাতে পাহারা দিয়ে গেলেন জওয়ানরা।
আর, বুথের সামনেই পলিথিন পেতে গ্রামের মহিলারা ঠায় বসে রইলেন প্ল্যাকার্ড হাতে। তাতে ব্রিজ চাই, রাস্তা চাই- এর মত নানা দাবিদাওয়ার কথা লেখা। গ্রামের মহিলারা জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘ বঞ্চনার প্রতিবাদে অনশন করছেন। অন্যতম আন্দোলনকারী ঝর্না বিশ্বাস বলেন, 'আমাদের এখানে কোনও উন্নয়ন হয়নি। সেজন্য আমরা সকাল ৫টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত অনশন করছি। জগন্নাথপুর, রাধাকান্তপুর ও রামকৃষ্ণপুর- এই তিনটি গ্রামের মহিলা বাসিন্দারা অনশনে যোগ দিয়েছেন।'
রাধাকান্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই বুথে ভোটার সংখ্যা ১,৩৫০। অন্যতম আন্দোলনকারী বাসন্তী হাজরার অভিযোগ, তাঁদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনা হয়েই চলেছে। ৪৪ বছর হল, এখানে রাস্তা তৈরি হওয়ার অনুমতি মিলেছে। কিন্তু, গত ৪৪ বছরে রাস্তা তৈরির কাজ শুরুই হয়নি এই অঞ্চলে। শুধু তাই নয়, ব্রিজ তৈরির কথা থাকলেও তা-ও তৈরি হয়নি। সেই কারণেই তাঁরা অনশনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
আর, এসব কারণেই মঙ্গলাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২২ নম্বরের বুথ মঙ্গলবার ফাঁকাই গেল। ভোটকেন্দ্র থেকে একটু দূরে টেবিল-চেয়ার পেতে ভোটারের নাম লেখার জন্য বসেছিলেন রাজনৈতিক দলের কর্মীও। উদ্দেশ্য, ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যে ভূতুড়ে ভোটার এসে লাইন দিয়েছে কি না! অথবা, সব বাসিন্দাই ভোট দিতে এসেছেন কি না। কিন্তু, তিনিও কার্যত অসহায় অবস্থায় ঠায় বসে রইলেন দিনভর।
আরও পড়ুন- হাউহাউ করে কান্না গৃহবধূর ! বুথে ঢুকতেই কী এমন বললেন প্রিসাইডিং অফিসার?
মজার বিষয় হল, সকাল থেকে এই কাণ্ড চললেও কোনও রাজনৈতিক নেতাকে ভোটারদের বোঝাতে আসার জন্য দেখা গেল না। প্রশাসনের কোনও কর্তা অথবা নির্বাচন কমিশনের কোনও আধিকারিককেও দেখা গেল না ভোটারদের বুঝিয়ে বুথে পাঠানোর উদ্যোগ নিতে। সকলে ভোট দিন- নানা কথা এবং ছবিতে এই বাক্যটিকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রচার করে নির্বাচন কমিশন। সেই প্রচার যে সমাজের সব মানুষের কাছে সমানভাবে পৌঁছতে পারেনি, মঙ্গলবারের হবিবপুর যেন, সেটাই ফের দেখিয়ে দিল।