Advertisment

এপুজোয় আসতেন লর্ড ক্যানিং, মা দুর্গার আবাহনে জমিদার বাড়িতে তুঙ্গে তোড়জোড়

শহর থেকে জেলা, বারোয়ারি কিংবা বাড়ি, বহু পুজোর পিছনে নানা ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে। এপুজো তেমনই একটি।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
Lord Canning were attened Baruipur Ramnagar Ghosh Bari Durga Puja

প্রাচীন এই দুর্গা পুজোকে ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস।

আর ক'দিন পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। শহর থেকে জেলা, বারোয়ারি কিংবা বাড়ি, বহু পুজোর পিছনে নানা ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে। শতাব্দীপ্রাচীন একাধিক দুর্গাপুজোর রীতি-রেওয়াজও চর্চাবহুল। আজ এই বিশেষ প্রতিবেদনে কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক দুর্গাপুজোর ইতিহাসের বর্ণনা মিলবে। যে পুজোর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে রয়েছে ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড ক্যানিংয়ের।

Advertisment

এক সময় বারুইপুরের রামনগরের ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজোয় এসেছিলেন ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং। তিনি ছাড়াও ইংরেজ অফিসারদের যাতায়াত ছিল এই ঘোষ বাড়িতে। ১৪১ বছরের এই পুজোয় বছরের পর বছর ধরে প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে আখ, চালকুমড়ো বলি প্রথা হয়ে আসছে। জমিদারী প্রথা চলে গিয়েছে। কিন্তু আজও জমিদারী প্রথার ইতিহ্য বহন করে দুর্গা পুজো হয়ে আসছে রামনগরের এই ঘোষ বাড়িতে।

ইংরেজ আমলে তৎকালীন বড়লাট লর্ড ক্যানিং ছিলেন জমিদার নরেন ঘোষের অতি ঘনিষ্ঠ। তাই ক্যানিং যাওয়ার পথে দুর্গা পুজোয় এসেছিলেন লর্ড ক্যানিং। পুজোয় কয়েক ঘন্টা সময় কাটিয়েছিলেন তিনি। ছাগ বলি প্রথা বন্ধ হয়ে গেলেও নিয়ম করে আখ, চালকুমড়ো বলি হয়ে আসছে পুজোয়। অষ্টমীর দিন ঘোষ বাড়ির পুজোয় নিরামিশ খাবার খেতেই ভিড় জমান গ্রামের লোকজন, এমনই জানিয়েছেন ঘোষ পরিবারের প্রবীণ সদস্য মলয় ঘোষ।

এই জমিদার বাড়ির ইতিহাস…

বারুইপুরের রামনগরের ঘোষ বাড়ির প্রথম জমিদার ছিলেন কৈলাস ঘোষ। তাঁর নামানুযায়ী বাড়ির নাম হয় কৈলাস ভবন। মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় শুটিংয়ের জন্য এই বাড়িতে প্রায়ই আসতেন। কৈলাসবাবুর ছেলে নরেন ঘোষ ইংরেজ আমলে ঘোষ বাড়িতে দুর্গা পুজো শুরু করেন। বাড়ির দুর্গা দালানে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির জোর প্রস্তুতি। কয়েকদিন পরেই সাজো সাজো রব পড়ে যাবে জমিদার বাড়িতে।

আরও পড়ুন- খুদে কন্যার আশ্চর্য্য কীর্তি! মুঠোয় ‘ভারতসেরা’র শিরোপা, বেনজির সাফল্যে বাংলার মুখ উজ্বল

কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন ঘোষ পরিবারের সদস্যরা। সবাই পুজোর কয়েকদিন মিলিত হন বাড়ির দুর্গা দালানে। পরিবারের প্রবীণ সদস্য মলয় ঘোষ বলেন, "ইরেজ আমলে বারুইপুর থেকে ক্যানিং যাওয়ার রাস্তা ছিল মাটির। তাই ক্যানিং যাওয়ার সময় বড়লাট লর্ড ক্যানিং তাঁর ফিয়ট গাড়ি বাড়ির পিছনে রেখে দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে ক্যানিং যেতেন। পূর্ব পুরুষ নরেন ঘোষের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দুর্গা পুজোয় তিনি বাড়িতে এসে পুজোও দেখেছিলেন। এছাড়া প্রায় সময়েই ইংরেজ সাহেবরা তাঁদের গাড়ি রাখার জন্য প্রায় আসতেন এই বাড়িতে।"

আরও পড়ুন- আরও আকর্ষণীয় দিঘা! পর্যটকদের মনোরঞ্জনে সমুদ্রবক্ষে তাকলাগানো নজরকাড়া পরিষেবা শীঘ্রই!

তিনি আরও বলেন, "আগে ষষ্ঠীর দিন কচু, দেশি চিংড়ির ঝোল খেতে প্রচুর মানুষের সমাগম হতো। অষ্টমীর দিন এখনও লুচি, ফুলকপির ডালনা খেতে গ্রামের মানুষজন আসেন। সপ্তমী থেকে দশমী চালকুমড়ো বলি হয়। সন্ধি পুজো দেখতে আশপাশের গ্রামের মহিলারা এখনও এবাড়িতে আসেন।" পরিবারের আর এক সদস্য প্রিয়জিত সেন বলেন, "বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে আমাদের পুজো হয়ে আসছে। জমিদারী প্রথার রীতি মেনেই বিসর্জনের দিন কাঁধে করেই ঢাক ঢোল বাজিয়ে মাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির পুকুরে। সেই পুকুর হেদুয়ার পুকুর বলে এলাকায় পরিচিত। এই পুকুরেই ইংরেজ সাহেবরাও স্নান করতে আসতেন।"

Durgapuja West Bengal South 24 Pgs
Advertisment