প্রেমিকের টানে কাঁটাতার টপকে অবৈধ ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে প্রেমিকের সঙ্গে বিয়েটাও সেরে ফেলেছিল প্রেমিকা। কিন্তু সংসার আর করা হয়ে উঠল না। ন্যাশানাল অ্যান্টি ট্রাফিকিং কমিটির চেয়ারম্যানের করা অভিযোগের পরিপেক্ষিতে বর্ধমান থানার পুলিশ প্রেমিক-প্রেমিকা দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে। ধৃত প্রেমিকার নাম নুরতাজ আক্তার মিম। আর প্রেমিক হলেন বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলার যুবক শেখ সামিম। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ রবিবার ধৃত প্রেমিক ও প্রেমিকাকে বর্ধমান আদালতে পেশ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ বছর বয়সি প্রেমিকা নুরতাজ আক্তার মিমের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার এনায়েতনগরে। ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় শহর বর্ধমানের তেঁতুলতলা এলাকার বছর ২২-এর যুবক শেখ সামিমের। বন্ধুত্বের সম্পর্ক পরে প্রেমের সম্পর্কের রূপ পায়। তারপর থেকেই প্রেমিকের টানে ভারতে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন নুরতাজ। প্রেমিকের কাছে পৌঁছনোর জন্য কোনও বাঁধন না-মানার পণ করে বসেন। শেষে মাস তিনেক আগে বাংলাদেশের এনায়েতনগর থেকে বনগাঁ সীমান্তে পৌঁছে যান অষ্টাদশী
নুরতাজ।
দালাল ধরে এর পর সে অবৈধ ভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। অভিযোগ, এই কাজে তাঁকে সাহায্য করে প্রেমিক সামিম। সীমান্ত টপকাতেই নুরতাজ তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে বর্ধমানের উদ্দেশ্যে রওনা হন। বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলায় প্রেমিকের বাড়িতেই তিনি ওঠেন। সেখানে মুসলিম শরিয়ত আইন অনুযায়ী তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তেঁতুলতলার শ্বশুর বাড়িতেই সংসার করছিলেন নুরতাজ। কিন্তু আইনের জাঁতাকলে পড়ে যাওয়ায় নুরতাজের আর বেশিদিন সংসার করা হয়ে উঠল না।
আরও পড়ুন- আদালতের নির্দেশে বিশেষ বন্দোবস্ত, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেলেন নওশাদ
প্রেমিকের সহযোগিতায় নুরতাজের অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে আসার ব্যাপারে ২৪ জুন ন্যাশনাল অ্যান্টি ট্রাফিকিং কমিটির চেয়ারম্যান অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপেক্ষিতে পুলিশ তদন্তে নেমে রবিবার সকালে সেখ সামিমের বর্ধমানের বাড়িতে হানা দেয়। তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা নুরতাজ আক্তার মিমের কাছে পার্সপোর্ট ও ভিসার ডকুমেন্টস চান। তখন নুরতাজ শুধুমাত্র প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইস্যু করা একটি জন্ম সার্টিফিকেটের জেরক্স কপি দেখাতে পারে। অন্য কোনও বৈধ কাগজপত্র সে পুলিশকে দিতে পারেনি। এরপরেই বর্ধমান থানার পুলিশ নুরতাজ ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করে। রবিবার দু’জনকেই বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে বিচারক দু’জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হেফাজতে পাঠিয়ে ১ জুলাই ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন।