তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলারিও। উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় লুইজিনহো ফেলারিও ইস্তফা গ্রহণ করেছেন। শুধু রাজ্যসভার পদ থেকেই নয়, গোয়ার এই প্রবীণ নেতা তৃণমূলের সঙ্গেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
শারীরিক অসুস্থতার কারণেই এই পদত্যাগ বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন লুইজিনহো ফেলারিও। তবে, তৃণমূল সূত্রে খবর, গোয়ার এই নেতাকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছিল দল। দলীয় অনুশাসন না মেনে চলার কারণেই এই পদক্ষেপ।
সোমবারই জাতীয় দলের তকমা হারিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ করেছে বাংলার শাসক দল। তার ২৪ ঘন্টা না কাটতেই এবার দল ও রাজ্যসবার সাংসদ পদ ছাড়লেন গোয়ার নেতা লুইজিনহো ফেলারিও। যা জোড়-ফুলের কাছে ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
নাট্য ব্যক্তিত্ব তথা বালুরঘাটের প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষের জায়গায় গোয়ার লুজিনহো ফেলারিওকে তৃণমূল রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভায় মনোনয়ন পেশ করেন ফেলারিও। শেষ পর্যন্ত এদিন সেই ফেলারিও-ই রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন।
আরও পড়ুন- জাতীয় থেকে আঞ্চলিক তৃণমূল! চব্বিশের আগে বড় ধাক্কা মমতার, কী কী ক্ষতি হল জোড়াফুলের?
রাজ্যসভা থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কেন হঠাৎ এই পদত্যাগ? সূত্রের খবর, গোয়া নির্বাচনের আগে লুইজিনহো ফেলারিও সঙ্গে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু গোয়ার ভোটের সময় এই দলবদলু নেতারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে দাবি তৃণমূলের। লুইজিনহো তো বিধানসভায় প্রার্থী পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর থেকে তৃণমূলের সঙ্গে এই বর্ষীয়ান নেতার সম্পর্ক তিক্ত হচ্ছিল বলে তৃণমূল সূত্রে জানা যায়। তেমন কোনও সম্পর্কই ছিল না। দলের ঘরোয়া বৈঠকে লুইজিনহো ফেলারিওকে রাজ্যসভার টিকিট দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে নাকি জানিয়েছিলেন খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ও রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেই ইস্তফা দিলেন ফেলারিও।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় লুইজিনহো ফেলারিও-র পদত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, 'ওনার পরবর্তী জীবন ভাল কাটুক। উনি সুস্থ হয়ে উঠুন এটাই চাইব।' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধী চৌধুরী বলেছেন, 'মোহভঙ্গ হতে শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছিলেন চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ করবেন। কিন্তু তা হবে না। জাতীয় দলের তকমা গিয়েছে, এবার রাজ্য ও জেলা পার্টি হওয়ার তকমাও চলে যাবে তৃণমূলের।'