ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে আগামী ২ নভেম্বরই এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দেবেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মঙ্গলবার তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়েও দিয়েছেন মহুয়া। একইসঙ্গে এদিন চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন, 'আমি এথিক্স কমিটির মুখোমুখি হতে চাই। ২ তারিখই যাব। আর গিয়ে ওদের সব অভিযোগ দুরমুশ করব। থাদের সব অভিযোগ ধরে ধরে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করব।'
মহুয়ার দাবি, একটা পয়সার দুর্নীতির প্রমাণ নেই। স্রেফ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে তাঁর মুখ বন্ধ করার জন্যই এসব অভিযোগ করছে বিজেপি। কেন তিনি পুরোটাকে 'ষড়যন্ত্র' বলছেন? কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের যুক্তি, 'একটা পয়সা নিয়েছি প্রমাণ করতে পারবে না। ওরা যে কোনও মূল্যে মুখ বন্ধ করতে চায়। তাই যা তা একটা অভিযোগ দিয়ে দিয়েছে। কোনও প্রমাণ আছে? এক পয়সা নিয়েছি প্রমাণ থাকলে এথিক্স কমিটিতে ডাকত না। এফআইআর করে সোজা জেলে ঢুকিয়ে দিত। কিছু প্রমাণ করতে পারবে না।'
রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলন করছে তৃণমূল। সেই আন্দোলনের থেকে নজর ঘোরাতেই তাঁর বিরুদ্ধ 'ষড়যন্ত্র' করার চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করেন মহুয়া মৈত্র। সাংসদের সাফ দাবি, এসব হলেও তিনি আদানিদের বিরুদ্ধে সুর নরম করবেন না।
ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন কাণ্ডে দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানীকে জেরা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মহুয়া মৈত্র। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, সংসদীয় কমিটিগুলির কোনও ফৌজদারি এক্তিয়ার নেই। তাই, এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব, কোনও আইন রক্ষাকারী সংস্থা না দিয়ে এথিক্স কমিটিকে দেওয়ার যৌক্তিকতা কি?
পুজোর আগে আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজেপি সাংলদ নিশিকান্ড দুবে অভিযোগ করেন যে, সাংসদ মহুয়া মৈত্র ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে সংসদে তাঁর স্বার্থে প্রশ্ন করেছেন। লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দেন দুবে। ওম বিড়লা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এথিক্স কমিটির কাছে পাঠায়। তারপরই এথিক্স কমিটি জয় অনন্ত দেহদ্রাই এবং নিশিকান্ত দুবের বয়ান নথিভুক্ত করেছে। ৩১ অক্টোবর মহুয়া মৈত্রকে বয়ান নথিভুক্ত করতে ডাকা হয়েছিল। তবে তিনি জানিয়েছিলেন ৫ তারিখ এথিক্স কমিটির মুখোমুখি হবেন তিনি। কিন্তু, কমিটি তাঁকে ২ তারিখ ডাকে। মহুয়া তাতেই সম্মতি প্রকাশ করেছেন। মহুয়ার বয়ান খতিয়ে দেখেই এই ইস্যুতে রিপোর্ট দেভে লোকসভার এথিক্স কমিটি।