জয়নগর বিধায়কের গাড়িতে হামলা সহ তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় দিল্লি থেকে গ্রেফতার হলো মূল অভিযুক্ত আবুল কাহার মোল্লা ওরফে বাবুয়া সমেত তিনজন।
সপ্তাহ দু’য়েক আগে জয়নগরের কল্যাণপুরে একটি পেট্রল পাম্পে তৃণমূল নেতা সারফুদ্দিন খান-সহ তিন জনকে বোমা-গুলি চালিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
পুলিশ ও সিআইডি সূত্রে খবর, জয়নগর কান্ডে ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যান যে এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় তৃণমূলের দুই কর্মী জড়িত আছে। এর পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে গ্রেফতার করার পর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারিরা জানতে পারেন, পথের কাঁটা সারফুদ্দিনকে সরাতে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত বাবুয়া এবং কায়ুম মোল্লা মোটা টাকার 'সুপারি', অর্থাৎ খুনের বরাত দিয়েছিল।
আব্দুল কাহার মোল্লা
পুলিশ সূত্রে আরো জানা গিয়েছে, মন্দিরবাজারের বাসিন্দা সুপারি কিলার শাহ জামাল লস্কর জেরায় স্বীকার করে, দশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জয়হিন্দ নেতা সারফুদ্দিন খানকে খুনের বরাত পেয়েছিল সে। এক লক্ষ টাকা অগ্রিমও নিয়েছিল। সারফুদ্দিনকে খুন করতে এসে অন্য দু’জন বোমা-গুলির বৃষ্টির মধ্যে পড়ে মারা গিয়েছেন৷ শাহ জামাল লস্কর ছাড়াও মনিরুল ইসলামের মতো পেশাদার খুনিরা জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, বিধায়ক নন, শুধু সারফুদ্দিনকেই খতম করতে এসেছিল দুষ্কৃতীর টিম। বস্তুত এই কারণে বিধায়ক নেমে যাওয়ার পরেই গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা-গুলি চালায় তারা।
আরও পড়ুন: জয়নগরে বিধায়ককে খুন করা উদ্দেশ্য ছিল না? ধন্দে তদন্তকারীরা
এদিকে, পুলিশের জেরায় মনিরুল স্বীকার করেছে, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আবু কাহার ওরফে বাবুয়া। ঘটনার সময় বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে শাহ জামালের পাশাপাশি মনিরুলও গুলি চালায়। ঘটনার পরই সে চলে যায় জয়নগরের মহিষমারিতে। সেখানে এক পরিচিত ব্যক্তির বাড়িতে ওঠে। মদ্যপ অবস্থায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে মনিরুলরা। ফিল্মি কায়দার এই নিখুঁত চিত্রনাট্য সাজিয়েছিল আব্দুল কাহার ওরফে বাবুয়া, যে অবশেষে সিআইডির জালে ধরা পড়ল।
সিআইডি সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত বাবুয়ার পাশাপাশি নিউ দিল্লি থেকে আরো দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলো জয়নগরের বাসিন্দা আব্দুল হোসেন মিস্ত্রি এবং মনিরুদ্দিন গাজি। এই দুজন বাবুয়ার সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিল বলে জানা গিয়েছে।