পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় হওয়া তিন মাস আগের ঘটনার সঙ্গে নাম জড়াল উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডের। পুলিশি তদন্ত জানা গিয়েছে, দত্তপুকুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কেরামত আলি এগরা বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে বেআইনি বাজি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় গ্রেফতার হয়েছিল। সেই সময় বারাসতের বেরুনান-পুকুরিয়া এলাকায় এই বেআইনি বাজির ব্যবসা করছিল কেরামত। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর ফের বেআইনি বাজি কারখানা চালানো শুরু করেছিল কেরামত। আর, তারই মাশুল গুণতে হল রবিবার। দত্তপুকুর বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই আট মৃতের মধ্যে রয়েছে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত কেরামত আলি ও তার ছেলে। শুধু তাই নয়। বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে ওঠে কয়েক কিলোমিটার দূরের শহর তথা উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসত। আর, দত্তপুকুরের যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেই মোচপোলের জগন্নাথপুর-নারায়ণপুর রাস্তার দুই পাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি এই বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে, যে একতলা বাড়িতে বেআইনি বাজির কারখানা চলত, সেই বাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেরামতকে সামনে রেখে পিছন থেকে এই বেআইনি বাজির কারখানা চালাত স্থানীয় তৃণমূলকর্মী শামসুল আলি ও আজিবুর রহমান।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত চালিয়েছেন ফরেনসিক দলের সদস্যরা। তাঁরা বিস্ফোরণস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২১ সালের পর মূল অভিযুক্ত কেরামত আলির বাজির কারখানার লাইসেন্স নবীকরণ হয়নি। তার মধ্যেই জামিন পাওয়ার পর সে ওই জনবহুল এলাকায় বাজি কারখানা এবং বাজি মজুত করা শুরু করে দিয়েছিল। কীভাবে সেটা সম্ভব, যথারীতি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধে নজরদারির ঢিলেমির অভিযোগ করেছেন। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ঘটনার পিছনে তৃণমূলের সমর্থকরা জড়িত।