'দুর্ঘটনা নয়, মালবাজারের ঘটনা খুন,' এমনই মন্তব্য বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের। শুক্রবার মালবাজারে মাল নদীর পাড়ের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছল বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। সেই দলেরই অন্যতম সদস্য শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শুক্রবার সকালে মাল নদীর পাড় ঘুরে দেখেছেন তাঁরা। এদিন বিপর্যয়ের জেরে মৃতদের বাড়িতেও গিয়েছিলেন বিজেপি প্রতিনিধিরা। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিজেপি নেতারা।
উল্লেখ্য, বিজয়া দশমীর সন্ধেয় মালবাজারে মাল নদীর ধারে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে এসেছিলেন বহু মানুষ। প্রত্যেকেই বিসর্জনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। হঠাৎই হড়পা বান আসে নদীতে। জলের তোড়ে খড়কুটোর মতো ভেসে যান মানুষজন। বিপর্যয়ের জেরে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে বহু মানুষ আহতও হয়েছেন।
আরও পড়ুন- জীবন বাজি রেখে নদীতে ঝাঁপ, ১০ জনের প্রাণ বাঁচিয়ে মালবাজারের ‘সুপারহিরো’ মানিক
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আগেই মাল নদীতে এই দুর্ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। সুকান্ত মজুমদারের দাবি ছিল, ''বালি ও পাথর মাফিয়াদের সাহায্য করতে মাল পুরসভার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে নদীতে কৃত্রিম বাঁধ তৈরি করা হয়েছিল।'' এমন দুর্ঘটনার পিছনে কৃত্রিম বাঁধ তৈরির একটি যোগ থাকার সম্ভাবনা উসকে দিয়েছিলেন সুকান্ত।
আরও পড়ুন- পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি করে সম্পত্তির পাহাড় গড়লেন কীভাবে? সায়গলকে জেরা ED-র
এবার বিজেপি প্রতিনিধি দল মাল নদীর ওই ঘটনাস্থল দেখতে গিয়ে সরাসরি খুনের অভিযোগ তুলল। শুক্রবার সাংসদ জয়ন্ত রায়, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, বিধায়ক মনোজ টিগ্গা-সহ বিজেপির নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছিল মালবাজারে। এলাকাটি ঘুরে দেখার পর সরাসরি ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা। বিজেপি প্রতিনিধি দলটির সদস্য বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের অভিযোগ, ''দুর্ঘটনা নয়, এটা খুন। এতগুলি মানুষকে কার্যত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।'' মালবাজারের ঘটনায় স্বজনহারা একটি পরিবারের সদস্য় দিলীপ পণ্ডিত। প্রশাসনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ক্ষোভ রয়েছে তাঁরও। মাল পুরসভা ও সেচ দফতরের বিরুদ্ধে মালবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
উল্টোদিকে, দশমীর দিন মালবাজারের ঘটনার জেরে জলপাইগুড়ি জেলায় দুর্গাপুজোর কার্নিভাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জানা গিয়েছে, মালবাজারের ঘটনার জেরে আগেই বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি এবারের কার্নিভাল থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানায় প্রশাসনকে। তারপরেই এবছরের মতো দুর্গাপুজোর কার্নিভাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।