দশমীর রাতে এযেন সাক্ষাৎ দেবদূতের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল মহম্মদ মানিককে। এই যুবকই জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া কমপক্ষে ১০ জনের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। মালবাজারে এখন মানিক 'সুপারহিরো'। গোটা মালবাজার জুড়ে লোকের মুখে মুখে ফিরছে এই যুবকের নাম।
মালবাজারের তেমশিলা গ্রামের যুবক মহম্মদ মানিক। বিজয়া দশমীর রাতে মাল নদীর ধারে আশেপাশের বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। প্রত্যেকেই প্রতিমা বিসর্জনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। ঠিক তখনই নদীতে আচমকা হড়পা বান নামে। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। মৃতরা হলেন তপন অধিকারী (৭২), ঊর্মি সাহা (১৩ ), রুমুর সাহা (৪২), আনস পন্ডিত (৮), বিভা দেবী (২৮), শুভাশিস রাহা (৬৩), সুস্মিতা পোদ্দার (২২) এবং শোভনদ্বীপ অধিকারী (২০)। ঘাটে সেই সময় কাতারে-কাতারে মানুষের ভিড়ে ছিলেন মহম্মদ মানিকও। খড়কুটোর মতো মানুষকে জলে ভেসে যেতে দেখেই নদীতে ঝাঁপ দেন এই তরুণ।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুজোতেও ভিজবে বাংলা? কী বলছে হাওয়া অফিস?
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেসে যাওয়া একের পর এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে থাকেন মানিক। কমপক্ষে ১০ জনকে জলের তোড়ে ভেসে যাওয়ার আগেই উদ্ধার করতে সফল হয়েছেন এই যুবক। নিজের জীবনকে বাজি রেখে মানিকের এই কীর্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রত্যেকে। এই মহৎ কাজই রাতারাতি মানিককে 'সুপারহিরো' বানিয়েছে। আট থেকে আশি, প্রত্যেকের মুখেই এখন মানিকের নাম ঘুরছে।
তবে খরস্রোতা নদীতে উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে মানিক নিজেও চোট পেয়েছিলেন। তাঁর পায়ে চোট লেগেছিল। স্থানীয়রাই দশমীর রাতে মানিককে নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। তবে চোট গুরুতর না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসার পরেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। মানিকের এই দারুণ কীর্তি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। উল্লেখ্য, মাল নদীতে এই হড়পা বানের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। মৃতদের মধ্যে চারজন মহিলা রয়েছেন। ভয়ঙ্কর এই বিপর্যয়ে আহতও হয়েছেন অনেকে।