Malda News: ফের তৃণমূল নেতা খুন মালদায়! গুলিতে ঝাঁঝরা দেহ উদ্ধার

Shootout : এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Shootout : এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

author-image
Madhumita Dey
New Update
Actor Passed away

প্রতীকী ছবি।

প্রেমিকার ঘরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হলো এক ইঁট ভাটার মালিকের। তিনি আবার এলাকার একজন সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ এই শুট আউটের ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ভিঙ্গোল গ্রাম পঞ্চায়েতের খোকরা গ্রামে ।

Advertisment

এই শুট আউটের ঘটনায় পর হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এবং সংশ্লিষ্ট মহকুমা পুলিশের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে তদন্তে পৌঁছায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়ায় জড়িত ছিল ওই ইঁট ভাটার মালিক। প্রেমিকার বাড়িতেই এসেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হয়েছে সে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে , তাহলে ওই ইঁট ভাটার মালিক এই আগ্নেয়াস্ত্র পেল কোথা থেকে? পুলিশ জানিয়েছে, ওই ইটভাটার মালিক এবং তার প্রেমিকা দুইজনেই বিবাহিত। তাদের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক চলছিল ।

এদিন সকালে ওই মহিলার ঘরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আত্মঘাতী হয় সাদ্দাম। মৃতদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। মালদার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন , এই ঘটনার পর ব্যবহৃত গান পাউডার সহ সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করেছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। পাশাপাশি সাকিলা খাতুন এবং তার স্বামী আসারাফুল হককে আটক করা হয়েছে। 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সাদ্দাম হোসেন (২৯) । তাঁর বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রঙ্গাইপুর এলাকায়। প্রতিদিনের মতো এদিনও ইসলামপুর গ্রামে ইঁট ভাটা যাওয়ার পথেই খোকরা গ্রামে প্রেমিকা সাকিলা খাতুনের বাড়িতে যান সাদ্দাম। যেখানে ইদানিং তার অবাধ যাতায়াত ছিল। যদিও সাদ্দাম এবং সাকিলা দুজনেই বিবাহিত। ওই প্রেমিকার বাড়িতেই আচমকাই গুলির শব্দে শোরগোল পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে দেখতে পাই ঘরের মেঝেতে রক্তমাখা অবস্থায় পড়ে রয়েছে সাদ্দামের দেহ। আর কান্নাকাটি করছে তার প্রেমিকা সাকিলা খাতুন।

Advertisment

পুলিশ জানিয়েছে, পয়েন্ট জিরো রেঞ্জ থেকে মাথার ডান দিকে গুলি লেগেছে ওই ইঁট ভাটা মালিকের। সেখান থেকে তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। সাদ্দামের সাথে সাকিলার বিবাহবহির্ভূত যে সম্পর্ক ছিল তা প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছে পুলিশ। আর এই সম্পর্ক নিয়েই বেশ কিছুদিন ধরেই দুজনের মধ্যেই টানাপোড়েন চলছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, সাকিলা আর সাদ্দামের বাড়ি একই গ্রামের এক কিলোমিটারের ব্যবধানে। ফলে তাদের মধ্যে গত এক বছর ধরে পরিচয় এবং বিবাহ বহিভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু এই গুলি কান্ডের ঘটনায় সাদ্দাম এবং সাকিলা দুই পরিবারই মুখে কুলুপ এঁটেছে।  

উল্লেখ্য , গত মে মাসে কাকিমার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে খুন হয়েছিল ঠিকাদার ভাইপো সাদ্দাম নাদাপকে। ইংরেজবাজারের রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম নাদাপের উদ্ধার হয় তার কাকিমার বাবার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন এলাকায়। গত ১৫ মে সাদ্দাম নিখোঁজ হয়। এরপর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ মে সাদ্দামের কাকিমা মৌমিতা হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তার ঠিক ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেহ উদ্ধার হয়। আর এই ঘটনা রেষ কাটতে না কাটতেই এবার হরিশ্চন্দ্রপুরে পরকীয়া সম্পর্কে জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল ইঁট ভাটা ব্যবসায়ীর। 

এদিকে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বিজেপির জেলা সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল জানিয়েছেন, শাসকদলের দুষ্কৃতীদের ভরে গিয়েছে । কেউ সুরক্ষিত নয় । অবাধে সন্ত্রাস চলছে। কোথা থেকে অস্ত্র আছে কোনও সদুত্তর দিতে পারছে না পুলিশ । এদিন আসলে কি ঘটেছে সেটিও পরিষ্কার করে জানায় নি পুলিশ।

তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, সাদ্দাম আমাদের দলের সক্রিয় একজন কর্মী ছিলেন। পুলিশ সম্পূর্ণ তদন্ত করে ঘটনাটি দেখছে। যদি কেউ এই ঘটনার পিছনে যুক্ত থাকে অবশ্যই তাদের শাস্তি হবে। বিজেপির অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। 

পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, সাদ্দাম হোসেনের গুলিবিদ্ধ হয়ে খুনের ঘটনায় সাকিলা খাতুন এবং তার স্বামী আশরাফুল হককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এটি একটি আত্মহত্যা।

Malda tmc Murder