আমের জন্য মালদার খ্যাতি দুনিয়োজোড়া। এ জেলার হিমসাগর, গোলাপখাসের স্বাদ মনভোলানো। মালদাতেই মিলেছে আড়াই লাখ টাকা কেজির আমের। এবার সেই আমারে জেলা মালদাতেই তাক লাগানো কমলা লেবু ফলিয়ে নজির তৈরি করলেন দীপক রাজবংশী। তাঁর বাগানে এই মরশুমে প্রায় দেড় কুইন্টালের ওপর কমলা লেবু ফলেছে। আমের শহরে কমলা লেবু চাষ করে অন্যান্যদের কাছে পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় এখন কৃষক দীপক রাজবংশী। তবে, এবার বাণিজ্যিকভাবে কমলার চাষ করা হয়নি। সব দিক খতিয়ে দেখে আগামী বছর থেকে বাণিজ্যিখভাবে লেবু চাষের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
পুরাতন মালদার গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা দীপক রাজবংশী নদিয়ার রানাঘাটের এক নার্সারি থেকে ভুটানি প্রজাতির চারা কিনেছিলেন। এরপর নিজের জমিতে বছর তিনেক আগে ১০টি কমলা লেবু চারা রোপন করেছিলেন। যার মধ্যে একটি চারা মরে যায়। কিন্তু বাকিগুলো জীবিত ছিল। এখন এক একটি গাছের উচ্চতা প্রায় ৭ ফুট করে। গত বছর থেকে ফল দেওয়া শুরু হয়েছে গাছগুলিতে। গত এপ্রিলের শুরুর দিকে ফুল আসতে শুরু করছিল। আর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফল পাকতে শুরু করে। আপাতত এক একটি গাছ থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ কেজি করে কমলা লেবু মিলছে।
আকারে মালদার কমলা দার্জিলিংয়েং কমলা লেবুর থেকে সামান্য ছোট। তবে স্বাদে বেশ সুমিষ্টি। অনেকেই বলছেন, কানপুরের কমলা লেবুর থেকে মালদার কমলা বেশি সুস্বাদু। তবে এতেই আত্মতৃপ্ত নয় কৃষক দীপক। তাঁর দাবি, তুলনামূলক বড় আকারের কমলা ফলানোর জন্য গবেষণা চালছে। আকারে বাড়লেই তাঁর বাগানে ফলা কমলা বিক্রির ব্যাপারে ভাববেন বলে জানিয়েছেন দীপক রাজবংশী। তাঁর কথায়, 'স্বাদে মিষ্টি এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আকার নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই। গবেষণা চালানো হচ্ছে আকার বড় করার। এ ব্যাপারে কোনও পরামর্শ পেলে ভালই হয়। আকার বড় করেই বিক্রির ব্যাপারে ভাবব।'
আরও পড়ুন- বর্ধমান স্টেশনে দুর্ঘটনা: রেলের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ, ছেড়ে কথা নয়! কী করলেন মৃতার স্বামী?
গোবর সার, ভার্মিকম্পোস্ট, নিম খইলের মিশ্রণেই কমলা ফলিয়ে কামাল করেছেন বলে দাবি করেছেন দীপক। আর দিয়েছেন নিজের হাতে তৈরি ভেষজ কীটনাশক। আমারে পর এবার মালদার মুকুটে সংযোজন কমলা লেবুর। এই বিষয়ে পুরাতন মালদার সহ কৃষি অধিকর্তা সমোজিৎ মজুমদার জানান, সত্যি খুব ভাল উদ্যোগ এটি। আমরা ওই চাষির পাশে রয়েছি।' আর মালদার ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা উজ্জ্বল সাহা বলেছেন, 'খুব ভাল উদ্যোগ। জেলায় নতুন ফল ফলানো সত্যিই আনন্দের। জেলা উদ্যান পালন দফতর পাশে রয়েছে।'