Advertisment

মালদার হিরো হীরালাল আজহারউদ্দিন, পুলিশের পোস্টার-বয় এখন এই ডিএসপি

তাঁর ভূমিকায় এখন গ্রামবাসীদের মুখে সাধু সাধু রব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
malda gunman in school police dsp azharuddin khan , মালদার হিরো হীরালাল আজহারউদ্দিন, পুলিশের পোস্টার-বয় এখন এই ডিএসপি

৭০ পড়ুয়ার ত্রাতা মালদা ডিএসপি (ডিএনটি) আজারুদ্দিন খান।

ক্লাসরুমের পাঠরত ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রীর প্রাণ বাঁচিয়ে এখন গ্রামের মানুষের কাছে হিরো হীরালাল মালদা ডিএসপি (ডিনটি) আজহারউদ্দিন খান। পুরাতন মালদার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে বন্দুকবাজের তাণ্ডবের ঘটনার জানতে পেরেই প্রথম থেকেই তদারকির ভূমিকায় ছিলেন মালদা ডিএসপি (ডিএনটি) আজারুদ্দিন খান। যেখানে অন্যান্য পুলিশকর্তাদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা গিয়েছে। সেখানে সাদামাটা আকাশি রং এর একটা গেঞ্জি আর জিন্সের প্যান্ট পড়েই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন বন্দুকবাজের ওপর।

Advertisment

ক্লাস রুমে ঢুকে বন্দুকবাজকে কোলপাঁজা করে ধরে ফেললেন পুলিশকর্তা আজারুদ্দিন খান। এমনকী গ্রামবাসীদের গণপিটুনির রোষ থেকেও বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন এই পদস্থ পুলিশ কর্তা। তাঁর ভূমিকায় এখন গ্রামবাসীদের মুখে সাধু সাধু রব। আর এই পুলিশকর্তাই এখন মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের কাছে হিরো হীরালাল।

বুধবার দুপুর পৌনে বারোটা নাগাদ পুরাতন মালদা থানার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্দ্রমোহন হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ক্লাসরুমে বন্দুক, বোমা নিয়ে ঢুকে পড়ে এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি পূরণ না হলে ওই ক্লাসে পাঠরত প্রায় ৭০ জন পড়ুয়া এবং শিক্ষককে প্রাণে মারার হুমকি দেয় সে। নিজেকে মানব বোমা বলে গোটা ক্লাসরুম উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন রাজু বল্লভ।

স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়েই প্রথম থেকেই বন্দুকবাজকে ধরার জন্যই সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেন মালদা ডিএসপি (ডিএনটি) আজহারউদ্দিন খান। যদিও তাঁর সঙ্গে অন্যান্য পুলিশ কর্মীরাও ছিলেন। কিন্তু সাদা পোশাকে জেলার ওই পদস্থ পুলিশ কর্তাকে বহু গ্রামবাসীরা চিনতে পারেননি। অনেকে তো দূর দূর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ওই পুলিশকর্তাকে। কিন্তু সত্যি যে তিনি হিরোগিরি দেখিয়েছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথম থেকেই বন্দুকবাজের ওপরেই ঈগলের মতো চোখ রেখে নজরদারি চালিয়েছিলেন মালদা আজহারউদ্দিন। আর এক ফাঁকে বন্দুকধারী রাজুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে কোলপাঁজা করে, হাত মুচরিয়ে ধরে ফেলেন পুলিশকর্তা আজহারউদ্দিন খান।

মালদা ডিএসপি ডিএনটি আজহারউদ্দিন খান বলেন, 'এটা আমার কর্তব্য । জীবনের পরোয়া না করে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাঁচানোটাই বড় কাজ। প্রথম থেকেই ওই দুর্বৃত্তের ওপর নজর রেখেছিলাম। সুযোগ বুঝেই কোপ মারি। ঝাঁপিয়ে ধরে ফেলেছি। নিজের জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু আমি ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি হতে দেব না, সেটা প্রথম থেকেই ভেবে নিয়েছিলাম।'

ওই বন্দুকবাজের এই তাণ্ডব চালানোর ঘটনার পিছনে কি রহস্য হয়েছে রয়েছে তা তদন্ত করবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত তাকে গ্রেফতার করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন আদালতে জানানো হবে। এদিকে গ্রামবাসীদের বক্তব্য, আজকের বন্দুক বাজকে ধরার পেছনে সত্যিই একজন হিরোকে দেখলাম। একেই বলে আসল পুলিশ অফিসার। উনি না থাকলে হয়তো কিছু অঘটন ঘটে যেতে পারত। তাঁর এই কাজকে সাধুবাদ জানাই। জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের পড়ুয়াদের অসংখ্য অভিভাবক। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে 'চক্রান্ত' বলে দাবি করেছেন।

Maldah Malda West Bengal Police
Advertisment