Malda medical College: এই প্রথম মালদা মেডিকেল কলেজে শিরদাঁড়ার ভেতরের টিউমারের অস্ত্রোপচার সফলভাবে করলেন চিকিৎসকেরা। শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের পর শনিবার মুর্শিদাবাদের ওই মহিলা রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। ওই রোগীর পরিবার জানিয়েছে, মালদার একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এই অপারেশনের জন্য ৮ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু মালদা মেডিকেল কলেজের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সফল অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকেরা। সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় পরিকাঠামো উন্নয়ন দেখে রীতিমতো সাধুবাদ জানিয়েছে ওই রোগীর পরিবার।
মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করে নজির গড়লেন নিউরো সার্জেন চিকিৎসক উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির আধুয়া গ্রামের বাসিন্দা রিজিয়া বিবি(৩৮)। তাঁর স্বামী নূরে আলম পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। স্বামীর সঙ্গে রিজিয়া বিবিও ভিন রাজ্যে কাজ করতেন। তাঁদের পাঁচ সন্তান। গত পাঁচ বছর ধরে রিজিয়া বিবি কোমর ব্যাথা সহ পায়ে ব্যাথায় কষ্ট পেতেন। প্রথম দিকে গুরুত্ব না দিলেও ব্যথা বাড়তে থাকলে চিকিৎসা করান। কিন্তু গত একবছর আগে দিল্লিতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখানে এইমস হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। সেখানেই এই জটিল রোগ ধড়া পড়ে। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান শিরদাঁড়ার ভেতরের স্পাইনাল কর্ড-এ টিউমার হয়েছে। অস্ত্রোপচার দরকার। কিন্তু সেখানে তারিখ পরিবর্তন হতে থাকে। অস্ত্রোপচার হচ্ছিল না। স্বামী নূরে আলম স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে চলে আসেন। বাড়িতে স্ত্রীর সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
অবশেষে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগে নিয়ে আসেন স্ত্রীকে। সেখানে নিউরো বিভাগের চিকিৎসক উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস অস্ত্রোপচার করার কথা বলেন। ওই দিনমজুর নূরে আলম জানিয়েছেন, মালদার একটি নার্সিংহোমে স্ত্রীর অস্ত্র প্রচারের জন্য ৮ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু মেডিকেল কলেজের আউটডোরে স্ত্রীকে দেখাতে নিয়ে এসে নিউরো সার্জেন্ট উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস বলেছিলেন মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানোর জন্য। তারপরে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে।
মালদা মেডিকেল কলেজের নিউরো বিভাগের চিকিৎসক সার্জেন উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস বলেন, 'এই রোগ নির্ণয় প্রথম দিকে সম্ভব নয়। রোগীর পায়ে ব্যাথা, ঝিমুনি হবে। ধীরে ধীরে হাঁটা চলা বন্ধ হয়ে পড়বে। এমনকি অস্ত্রোপচার না করলে প্রস্রাব, পায়খানা সব বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এইক্ষেত্রে রোগীর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে। ধীরে ধীরে রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন'। মালদা কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ পার্থপ্রতিম মুখার্জি জানিয়েছেন , মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে এই চিকিৎসা হয়েছে। তিনজন চিকিৎসক প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় নিয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন।