Advertisment

Premium: অভাবে বন্ধ হয়েছে পড়াশোনা, দুঃস্থ পড়ুয়াদের 'মানুষ' করতে প্রাণপাত 'মাস্টার দাদার'

টাকার অভাবে ইচ্ছে থাকলেও বেশিদূর পড়াশুনা হয়নি। আর আজ সেই ছেলেটাই এলাকার দুঃস্থ বাচ্চাদের উচ্চশিক্ষিত করার লক্ষ্যে প্রাণপাত করছে। নিজের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নকে যেন সেই সব দুঃস্থ ছেলে-মেয়ের চোখ দিয়েই দেখতে চাইছেন মালদহের ধ্রুব দাস। না এটা কোন সিনেমার চিত্রনাট্য নয়। বাস্তবে এমনই কাণ্ডে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Toto driver gives Free tuition to poor students, Toto Driver Teacher, Toto Driver Teacher in Malda, Toto driver Free tuition class, ধ্রুব দাস, টোটো চালক, টোটো চালক ধ্রুব মাস্টারের ক্লাস, গরিবদের বিনামূল্যে শিক্ষাদান, ধ্রুব মাস্টারের ক্লাস"

অভাবে বন্ধ হয়েছে পড়াশুনা, দুঃস্থ পড়ুয়াদের 'মানুষ' করার বিরাট উদ্যোগ মাস্টার দাদার

সংসারের হাল ধরতে যে ছেলেটাকে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর পর টোটো নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে হয়েছে সেই ছেলেটাই আজ এলাকার ৭০ জন দুঃস্থ বাচ্চার পড়াশুনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন।

Advertisment

টাকার অভাবে ইচ্ছে থাকলেও বেশিদূর পড়াশুনা হয়নি। আর আজ সেই ছেলেটাই এলাকার দুঃস্থ বাচ্চাদের উচ্চশিক্ষিত করার লক্ষ্যে প্রাণপাত করছে। নিজের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নকে যেন সেই সব দুঃস্থ ছেলে-মেয়ের চোখ দিয়েই দেখতে চাইছেন মালদহের ধ্রুব দাস। না এটা কোন সিনেমার চিত্রনাট্য নয়। বাস্তবে এমনই কাণ্ডে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন তিনি।

মালদা শহরের ২৩ নং ওয়ার্ডের ডিজেল সেড কলোনির ধ্রুব দাস। ধ্রুব'র বাবা নেই। সংসারের হাল ধরতে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েই টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয়েছিল উপার্জনের তাগিদে। কিন্তু ধ্রুব চান না এলাকার আর পাঁচটা বাচ্চা তার মতই তাদের স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিক। সেই লক্ষ্যেই বিগত ২ বছর ধরে এলাকার ৭০ জনের বেশি দুঃস্থ বাচ্চাকে বিনামূল্যে পড়াশুনা শেখান এই 'টিউশন দাদা'।

এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ পেশায় ঠিকে শ্রমিক। কেউ আবার দিন মজুরি করে সংসার চালান। এই সব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা সরকারি স্কুলে পড়লেও আলাদা ভাবে টিউশন দেওয়ার মত সামর্থ্য পরিবারের নেই। আর সেই অভাবটাই পূরণ করে ধ্রুব। এলাকার বাচ্চাদের কাছে টিউশন দাদাই হল মুসকিল আসান।

ছোট থেকেই ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে শিক্ষক হবেন। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। সেই থেকে ধ্রুব প্রতিজ্ঞা করেন এলাকার আর পাঁচটা বাচ্চাকে যাতে তার মত আর্থিক সংকটের কারণে পড়াশুনা ছেড়ে দিতে না হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে ৭ টা থেকে ১০ টা এলাকার হতদরিদ্র ছেলে-মেয়েগুলোকে বিনাপয়সায় টিউশন দিয়ে বেরিয়ে পড়েন পেটের তাগিদে টোটো চালাতে। পাশাপাশি উপার্জনের সামান্য টাকাতেই সেই সব গরীব ছেলে-মেয়েগুলোর জন্য পড়াশুনার সামগ্রীও কিনে আনেন ধ্রুব। তার এই মহান কর্মকাণ্ডকে কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অনেকেই ধ্রুব'র এই কঠিন লড়াইয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

নিজের এমন মহৎ কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে ধ্রুব বলেন, 'ছোট থেকেই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। আমি চাই না আমার মত কেউ টাকার অভাবে মাঝপথে পড়াশুনা ছেড়ে নিজের স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিক। সেই লক্ষ্যেই এলাকার দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের বিনামূল্যে প্রতিদিনই পড়াই'। ১৫ জনকে দিয়ে শুরু করলেও আজ ধ্রুব'র ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা পেরিয়েছে ৭০। এমন ভাল মাস্টার দাদাকে পেয়ে বেশ উৎসাহ নিয়েই পড়াশুনা করে এলাকার কচিকাঁচারা।

kolkata news
Advertisment