অদ্ভুত এক নেশা মালদহের সুবীর সাহার। বিশ্বের নানা দেশের রকমারি দেশলাই বাক্স সংগ্রহের নেশা তাঁর। সংগৃহীত সেই দেশলাই বাক্স দিয়েই বিভিন্ন ভাস্কর্য্য তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই প্রৌঢ়। তাঁকে এই কাজে নিয়মিত উৎসাহ ও সাহায্য করে চলেছেন তাঁর স্ত্রী-মেয়ে।
পেশায় গ্রন্থাগারিক সুবীর সাহার বাড়ি মালদহ শহরের গ্রিন পার্ক এলাকায়। তাঁর এই শিল্পকর্ম নিয়েই এখন গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলতে চাইছেন সুবীরবাবু। তাঁর পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী এবং একমাত্র মেয়ে। বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার দেশলাই বাক্সের অবাক করা সংগ্রহ রয়েছে তাঁর কাছে। তা দিয়েই নানা শিল্পকার্যের সম্ভার সাজিয়েছেন প্রৌঢ়। দেশলাই কাঠি দিয়ে তৈরি তাঁর একাধিক শিল্প-সৃষ্টি নজর কাড়ছে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে নানা দেশের নানা ধরনের দেশলাই বাক্স সংগ্রহের নেশা সুবীর সাহার। জমানো সেই দেশলাই বাক্স ও কাঠি দিয়ে নিজের ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে তৈরি করে চলেছেন একের পর এক শিল্পকর্ম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে মহাত্মা গান্ধী। বিশ্ববরেণ্য একাধিক মহান-ব্যক্তিত্বের মূর্তি গড়ে ফেলেছেন সুবীরবাবু। শুধু তাই নয়। নিজের এই শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে সামাজিক সচতেনার বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা করে চলেছেন প্রৌঢ়।
ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, জাপান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানি-সহ প্রায় ৫০ টি দেশের কয়েক হাজার দেশলাই বাক্স দেখা যাবে সুবীরবাবুর সংগ্রহশালায়। এই দেশলাই বাক্স ও কাঠি দিয়ে নানা ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করে চলেছেন তিনি। স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী-সহ একাধিক মনীষীর প্রতিকৃতি রয়েছে তাঁর বাড়িতে। এরই পাশাপাশি দেশলাই কাঠি দিয়ে তৈরি সাইকেল, নৌকা, ঘরবাড়ি ও দুর্গাপ্রতিমাও নজর কাড়ছে।
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর আদলে দেবীমূর্তি, দশভুজার কোলে চড়িয়ে গণেশ বন্দনা মালদহে
নিজের এই কীর্তি সম্পর্কে সুবীর সাহা জানালেন, ফেলে দেওয়া নানা জিনিস দিয়েও বিভিন্ন ধরনের নজরকাড়া সৃষ্টি সম্ভব। ফেলে দেওয়া নানা ধরনের জিনিস দিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বার্তা পৌঁছোনোও সম্ভব। মূলত এই ভাবনা থেকেই সুবীরবাবু দেশলাই বাক্স সংগ্রহে নামেন। বিশ্বের প্রায় ৫০ টি দেশের নানা ধরনের দেশলাই বাক্স তাঁর সংগ্রহশালায় রয়েছে। গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ডে নাম তোলার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। বাবার এই কাজে এখন যোগ্য সঙ্গী কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুচিস্মিতা সাহা। তিনি জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই বাবাকে এই সমস্ত কাজকর্ম করতে দেখেছেন। পড়াশোনার ফাঁকে সাধ্যমতো বাবাকে তিনি সাহায্য করেন।। সুবীরবাবুর স্ত্রী মধুলেখা সাহাও সমানতালে বাড়ির কাজের ফাঁকে স্বামীকে সাহায্য করে চলেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন