প্রকাশ্য রাস্তায় সিভিক ভলান্টিয়ারের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের লক্ষাধিক টাকা লুঠ করল দুষ্কৃতীরা। আর এই ঘটনার খবর পেয়ে বাংলা-বিহার সীমান্ত থেকে সশস্ত্র দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। রীতিমতো হিন্দি সিনেমার কায়দায় ব্যাংকের লক্ষাধিক টাকা লুঠের পরিকল্পনা করেছিল সশস্ত্র দুষ্কৃতীর দল। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে গেল দুষ্কৃতীরা।
সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা-কুশিদাগামী রাজ্য সড়ক কামারতা এলাকায়। হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেট ব্যাংকের মেন ব্রাঞ্চ থেকে টাকা তুলে নিয়ে চণ্ডীপুর কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্টে নিয়ে যাচ্ছিল ওই সিএসপির মালিক শাহজামাল। মোটর-সাইকেলে করে নগদ ২ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তুলসীহাটা থেকে বের হয়ে কামারতায় একটি ইটভাটার কাছে মন্দিরের সামনে তাকে ঘিরে ধরে আরও দুটি মোটর-সাইকেল। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় টাকার ব্যাগ।
পেশায় সিভিক পুলিশ শাহাজামাল সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। ঘটনার মুহূর্তেই সামনে থাকা মোটর-সাইকেলের নম্বর দেখে নেন তিনি। পুলিশকে ঘটনার বিবরণ দেন। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা আইসি দেওদূত গজমের খবর পেতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। আইসির নির্দেশে অভিযুক্তদের ধরতে শুরু হয় পুলিশি অভিযান। চাঁচল থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে গোবিন্দপুর ঘাট নাকা পয়েন্টের কাছে পুলিশের জালে ধরা পড়ে অভিযুক্ত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজন গ্রেফতার হয়েছে এবং আরেক জনের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
আরও পড়ুন লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে গেল যাত্রীবোঝাই টোটো, ঝুঁকি নিয়ে পার করিয়ে ‘ত্রাতা’ তৃণমূল কাউন্সিলর
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মনসুর আলম (৩২)। তার বাড়ি চাঁচল থানার সুরতপুর এলাকায়। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা, মোটর বাইক, দেশি পিস্তল এবং দুই রাউন্ড গুলি। পুলিশ সূত্রে খবর বিহারে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত। সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে বিহার যোগ রয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের এই সাফল্যে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চণ্ডীপুর সিএসপির মালিক তথা সিভিক ভলান্টিয়ার শাহজামাল বলেন, "হরিশ্চন্দ্রপুর মেইন ব্রাঞ্চ থেকে টাকা তুলে নিয়ে সিএসপিতে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে মাঝ রাস্তায় দুটি বাইক আমাকে ঘিরে ধরে মাথায় বন্দুক ঠেকায়। প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে টাকা লুঠ করে নিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দিতে এক ঘণ্টার মধ্যে ধরা পড়েছে অভিযুক্ত।"
হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জামালুদ্দিন বলেন, টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাই হয়। পুলিশ খুব তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেছে। চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার হয়েছে।