Maldah Family Murder: কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফের অপরাধমনষ্কতা রীতিমতো ধন্ধে ফেলে দিয়েছে গোয়েন্দাদের। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, আসিফের সঙ্গে জঙ্গি যোগের একটা প্রমাণ খুঁজে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সম্ভবত ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বা আন্তর্জাতিক কোনও চক্র তার মগজধোলাই করেছে। এমনটাই ধারণা গোয়েন্দাদের। এই ধারণা সত্যি হলে, তাকে জেরা করতে মালদহে আসতে পারে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ।
তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রায় একবছর নিখোঁজ ছিল আসিফ। এই সময়েই তার সঙ্গে জঙ্গি যোগ গড়ে উঠতে পারে। এমনটাই অনুমান গোয়েন্দাদের। এই একবছর সে কোথায় ছিল, সেই মিসিং লিঙ্ক জুড়তে চান তদন্তকারীরা। যদিও জানা গিয়েছে, সেই সময় ভুয়ো অপহরণের গল্প ফেদেছিল আসিফ। বাবার থেকে মুক্তিপণ আদায় করাই ছিল লক্ষ্য।
এদিকে, একবছর বাদে ফিরে এসে স্থানীয় মাদ্রাসা স্কুল ছেড়ে কালিয়াচকের চামাগ্রাম হাইস্কুল থেকেই মাধ্যমিক পাশ করে এই তরুণ। তবে গোয়েন্দাদের ভাবাচ্ছে তার বাড়ির গঠন। অদ্ভুতভাবে কেন বাড়ির একটা অংশের নবনির্মাণ করা হয়েছিল? এটাই আসিফের থেকে জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা। দুটি বাড়ির সংযোগপথ হিসেবে কেন সুড়ঙ্গ বানানো হয়েছিল, খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। এমনকি তার বাড়ির নকশা একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। এমন বাড়ি অন্য কোনও সন্দেহভাজনের রয়েছে কিনা তদন্ত করে দেখবে তারা।
ইতিমধ্যে, ডার্ক ওয়েবে আসিফের যাতায়াত, অস্ত্র ভাণ্ডার উদ্ধার, কম্প্যুটারে হিস্ট্রিতে সেক্স চ্যাটের উপস্থিতি আসিফের অপরাধমনষ্কতাকে জড়াল করেছে গোয়েন্দাদের সামনে। অনেক ছোট বয়স থেকেই বাড়ির কর্তা হয়ে উঠেছিল সে। তার আপত্তিতেই জয়েন্ট প্রবেশিকায় বসতে পারেনি দাদা আরিফ। এমনটাই গোয়েন্দা সূত্রে দাবি।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, যে কায়দায় ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে মাদক মিশিয়ে বাবা-মা সহ বাড়ির চার সদস্যকে অচৈতন্য করে নৃশংসভাবে খুন করেছে আসিফ, তাতে পেশাদার অপরাধীদের নিখুঁত পরিকল্পনার ছাপ ধরা পড়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তাই ঘটনার গভীরে পৌঁছতে চাইছে পুলিশ। শনিবারই আসিফ কবুল করেছে যে, দেহগুলি গুদাম ঘরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে গ্রামবাসীরা জানতে না পারেন, তার জন্য ১২ ফুটের একটি সুড়ঙ্গ কাটা হয়েছিল। ওই সুরঙ্গ পথেই ঘর থেকে গুদামে দেহগুলো সরানো হয়। পরে ওই গর্ত ঢালাই করে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ প্রমাণ লোপাটের যাবতীয় মরিয়া চেষ্টা করেছিল সে।
ছোট ল্যাব বানিয়ে কাজ করতো আসিফ। গত চারমাস ধরে বাড়িটিকে দুর্গে পরিণত করেছিল সে। সম্ভবত মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ১৮ বছরের তরুণ ঘরে বসেই মৃতদেহ সংরক্ষণের গবেষণা করছিলো কিনা তাও নজরে রয়েছে পুলিশের। অপরদিকে, কেমিকেল, কফিনের সাজসরঞ্জাম সবই ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার করে সংগ্রহ করেছিল। ঘটনার পর্যায়ক্রম, আসিফ ও রাহুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের অনুমান, সম্ভবত মমি তৈরির গবেষণা মাথায় চড়েছিল ওই তরুণের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন