Maldah north bengal mango cyclone remal: রবিবার থেকেই ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পড়বে মালদা-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে। তার আগেই তড়িঘড়ি মালদার বিভিন্ন বাগান থেকে আম পাড়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন চাষিরা। আবহাওয়া দফতরের সূত্র অনুযায়ী, সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের বেগ বেশি থাকবে। তবে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে এই ঘূর্ণিঝড় রেমাল বয়ে যাবে। আর আবহাওয়া দফতরের এমন পূর্বাভাস শুনেই দুশ্চিন্তায় ঘুম উবে গিয়েছে মালদার আম থেকে লিচু চাষিদের।
এমনকী, এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ধান, গম, পাটেরও চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। সেই কারণে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটের আগে ইতিমধ্যে মালদার বেশ কিছু এলাকার বাগানে তড়িঘড়ি আম পাড়ার কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শান্তিপুর এলাকার আমচাষি প্রণব মণ্ডল, নারায়ণ মণ্ডলদের বক্তব্য, যে ঝড়ের কথা বলা হচ্ছে, সেটি সাংঘাতিক আকার নিতে পারে। গাছের অর্ধেক আম হয়তো ঝড়েই পড়ে যাবে। প্রচুর টাকার ক্ষতি হতে পারে। ফলে এই মুহূর্তে যতটা সম্ভব, গাছ থেকে আম পাড়ার কাজ সম্পূর্ণ করছি। পরবর্তীতে সেগুলো কীভাবে পাকানো যায়, তা দেখা যাবে। আপাতত, আর্থিক লোকসানের হাত থেকে এই ভাবেই আম পেড়ে বাঁচতে হবে।
কালিয়াচক ১ ব্লকের সুজাপুর এলাকার লিচুচাষি শাহজাহান শেখ, রিয়াদ শেখদের বক্তব্য, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে লিচু পাড়ার কাজ শুরু হয়ে যেত। গাছে লিচু পাকতেও শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু, আর এখন অপেক্ষা করা যাবে না। ঘূর্ণিঝড় যেভাবে হবে বলে শুনছি, তাতে লিচুর প্রচুর ক্ষতি হতে পারে। সেই সম্ভাবনার দিকে তাকিয়েই গাছ থেকে লিচু পেড়ে ফেলা হচ্ছে। এদিকে মালদা জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় রেমাল রবিবার রাত থেকে আছড়ে পড়তে পারে।
মালদা জেলা আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক তপনকুমার দাস জানিয়েছেন, আপাতত ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশের খেপিপুরা থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে এবং পশ্চিমবঙ্গের ক্যানিং উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ৮১০ কিলোমিটার দূরে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ২৬ এপ্রিল সন্ধেবেলা বাংলাদেশের খেপিপুরা আর পশ্চিমবঙ্গের ক্যানিং উপকূলবর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে। এমনকী, ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগেও এই ঝড় বইবে বলে সম্ভাবনা আছে।
আরও পড়ুন- দুরন্ত গতিতে ধেয়ে আসছে ‘রেমাল’, এই নামের মানে কী, কীভাবে হল নামকরণ?
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলা এবং উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে। জেলায় জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ২৪ ঘণ্টা এই নিম্নচাপের প্রভাব থাকবে সমস্ত জেলায়। তবে মালদা জেলার ক্ষেত্রে ২৭ মে রবিবার সকাল থেকেই ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে এই ঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে কাউকে না বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গর জেলাগুলোর মধ্যে মালদা, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জেলাগুলোকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।