দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ উঠল বান্ধবীর বাবার বিরুদ্ধে। আর তারপরেই ওই ছাত্রীর রহস্যজনক অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় শোওয়ার ঘর থেকে। বুধবার রাতের এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চরম উত্তেজনা ছড়ায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসিহাটা মস্তান মোড় এলাকায়। বিহারের বাসিন্দা অভিযুক্ত মৃত ছাত্রীর বান্ধবীর বাবার বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পরিবারের লোকেরা। বিষয়টি জানতে পেরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মৃত ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রীর নাম স্নেহা সাহা (১৮)। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী স্নেহার বান্ধবী ছিল বিহারের আজিমনগরের বাসিন্দা জ্যোতি শা। তুলসিহাটায় দাদুর বাড়ি ছিল স্নেহার বান্ধবী জ্যোতি শা। তুলসীহাটায় দাদুর বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করত। একই সঙ্গে পড়াশোনা করত দুই বান্ধবী। বান্ধবী জ্যোতি শা কিছু দিন আগে বিয়ের জন্য তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায় বাড়ির অমতে। এই ঘটনায় জ্যোতির বাবা মনোজ শা ক্রমাগত দায়ী করতে থাকে স্নেহাকে। ফোন করে দেওয়া হয় বিভিন্ন রকম হুমকি। এমনকি ঘরবাড়ি ভাঙা থেকে শুরু করে আর্থিক ভাবে চাপ দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মৃত ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত মনোজ শা-র সেই মানসিক চাপ সহ্য না করতে পেরে আত্মঘাতী হয়েছে স্নেহা। সমগ্র ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। অভিযুক্ত জ্যোতি শা'র বাবা মনোজ শা'র কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্নেহার পরিবার। মিন্টু সাহার তিন মেয়ের মধ্যে মেজ মেয়ে ছিল স্নেহা। মধ্যবিত্ত পরিবার হলেও মেয়েদের কোনও অভাব থাকতে দেননি। এই ভাবে মেয়ের প্রাণ চলে যাবে ভাবতে পারছে না স্নেহার বাবা।
মৃতার এক কাকু দিলীপ কুমার সাহা বলেন, "জ্যোতি বিহারের বাসিন্দা এখানে মামার বাড়ি ছিল। সেই সুত্রে স্নেহার সঙ্গে পরিচয়। কোনও ছেলের সঙ্গে ভালবেসে ও পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় আমার ভাইঝিকে বারবার দোষারোপ করছিল। মানসিক ভাবে চাপ দিচ্ছিল। তার জন্যই ঘটনাটি ঘটেছে।" পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ।