Advertisment

পিটিয়ে মেরে বাঘরোলের মাংসে পিকনিক-ছবি পোস্ট, 'হিরোগিরি'-র মাশুল দিল যুবক

সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত বাঘরোল হাতে যুবকের ছবি দেখে জোরদার তৎপরতা শুরু করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
maldah youth arrested aleged kiling of wildcat

পুলিশ ও বনদফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ধৃত যুবক। ছবি: মধুমিতা দে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় 'হিরোগিরি' দেখানোই কাল হল। বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মারার পর বাঘরোলের দেহ নিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিল মালদহের গাজোলের এক আদিবাসী যুবক। সেই ছবিগুলিগুলি দেখেই নড়চড়ে বসে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদেরই নালিশে শেষমেশ যুবকের ঠাঁই শ্রীঘরে। বাঘরোল মেরে তার মাংস দিয়ে পিকনিকের আসর বসিয়েছিল ধৃত যুবক ও তার বন্ধুরা। এই ঘটনায় আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

Advertisment

বিলুপ্তপ্রায় একটি বন্য জন্তুকে নৃশংসভাবে মারার পর ছবি তুলে তা পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে এব্যাপারে তদন্তে নামে বনদফতর। মালদহ বন দফতরের কর্তারাও এমন ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান।

বাঘরোল শিকারী ওই আদিবাসী যুবকের খোঁজ শুরু হয়। অভিযুক্তের নাম-ঠিকানা জোগাড়ের তোড়জোড় শুরু করে দয় বনদফতর। শেষমেশ কালী পুজোর দিন অভিযান চালিয়ে গাজোল থানার কুমারপুর এলাকা থেকে অজিত হেমব্রম নামে ওই আদিবাসী যুবককে গ্রেফতার করেন বনদফতরের কর্তারা। ধৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তুলে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের হাতে। 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,  ধৃত অজিত হেমব্রমের এক বন্ধু মঙ্গল হেমব্রম এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। অজিতের ধরা পড়ার খবর জানতে পেরেই তার বন্ধু মঙ্গল গা ঢাকা দিয়েছে। তার খোঁজেও তল্লাশি চলছে। ধৃত অজিত হেমব্রমের বাড়ি থেকে রক্তমাখা একটি বাঁশ, লাইলনের দড়ি, জাল উদ্ধার করা হয়েছে। ওই বাঁশ দিয়েই বাঘরোলকে পিটিয়ে মারে অজিত, জেরায় একথা স্বীকারও করেছে ধৃত যুবক।

আরও পড়ুন- ‘মেয়র গৌতমের সঙ্গে কথা হয়’, CPIM-এর অশোকের বাড়িতে বলে বললেন বিজেপি সাংসদ, কীসের ইঙ্গিত?

বনদফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জেরায় অজিত জানিয়েছে বেশ কিছুদিন আগে তার এক বন্ধু মঙ্গল হেমব্রম তাকে কুমারপুর এলাকার একটি জলাশয়ে মাছ ধরতে নিয়ে গিয়েছিল। সেই জলাশয় ঘিরেই বেশ কিছু বাঘরোল থাকত। বাঘরোল ধরতে ওই জলাশয়ের কাছেই একটি ফাঁদ পেতেছিল তারা। এরপরই ফাঁদে আটকা পড়ে বিলুপ্ত প্রজাতির বাঘরোল। পরে সেই বন্যজন্তুটিকে বাড়িতে এনে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মারে অজিত ও তার বন্ধু মঙ্গল। তারপরে বন্ধুদের সঙ্গে ওই দিনই বাঘরোলের মাংস রান্না করে জমিয়ে পিকনিকের আসর বসে।

মালদহের বিভাগীয় বনাধিকারিক সিদ্ধার্থ বি জানিয়েছেন, প্রাথমিক জেরায় ধৃত যুবক তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এই ধরনের বন্যজন্তু বর্তমানে বিলুপ্তির মুখে। এটা এক ধরনের বনবিড়াল। চিতা বাঘের মতো এর গায়ের রং এবং আকৃতিতে প্রায় শেয়ালের মতো। এই ধরনের বন্যজন্তু এখন খুবই কম দেখা যায়। এসব বন্য-জন্তুকে জঙ্গলে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বনদফতর সব ধরনের নজরদারি রাখছে। তবে ঘটনাটি সম্পর্কে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অভিযোগ জানিয়েছিল। ধৃতকে গ্রেফতারের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

Maldah Arrested West Bengal Forest Department
Advertisment