বিরোধীদের অভিযোগের কথা এবার রাজ্যের শাসক দলের বিধায়কের মুখে। সাফ বললেন, পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের মদতেই মাটি মাফিয়ারা বাঁধের মাটি প্রকাশ্যে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ মাটি মাফিয়াদের কাছ থেকে টান তোলে। এই ধরণের কাজ চলতে থাকলে ভাঙন রোধ সম্ভব নয় বলেও দাবি তৃণমূলের বিধায়কের। গোটায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের বদনাম হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চাঁচোল মহকুমার রতুয়া এলাকায় ফুলহার নদীর ভাঙন ঠেকানো এবং বাঁধ সংস্কারের কাজের শুভ সূচনায় সম্প্রতি হাজির ছিলেন রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। ছিলেন মালতিপুরের দলীয় বিধায়ক রহিম বক্সি সহ প্রশাসনের অন্যান্য অধিকারিকরা। সেখানেই পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে।
কী বলেছেন তৃণমূল বিধায়ক?
বালি ও কয়লা পাচারকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। এই পাচারকাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। তার মধ্যেই বালি মাফিয়াদের কাছ থেকে পুলিশের তোলা আদায়ের অভিযোগ করলের রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সময় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন 'পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশকে হাত করেই এলাকার মাটি মাফিয়ারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মালদার ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সব রকম উদ্যোগ নিচ্ছেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে মাটি মাফিয়ারা বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে। এতে ভাঙ্গন ঠেকানো সম্ভব নয়। পুলিশ ও প্রশাসনের এব্যাপারে কোন নজর নেই। পুলিশ প্রশানের একাংশ টাকার বিনিময়ে মাটি মাফিয়াদের মদত জোগাচ্ছে। আমরা চাই অবিলম্বে এই বেআইনি কাজ বন্ধ করা হোক।'
বিধায়কের এই অভিযোগের কথা শুনেই সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'এই অভিযোগ কোনওভাবে বরদাস্ত করা হবে না। মাটি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। বাঁধের মাটি চুরির পিছনে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।'
এই অভিযোগ অবশ্য খারিজ করেছেন মালদহের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁর ব্যক্তিগত তদন্তে পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরণের কোনও অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার এবং সেচ দফতরের উদ্যোগে দেবীপুর এবং সূর্যাপুর এলাকার ৯৩০ মিটার ফুলহার নদীর ভাঙ্গন প্রকল্পে বাঁধ মেরামতির কাজের শুভ সূচনা করা হয়েছে। এছাড়াও রতুয়ার বিলাইমারি এলাকার নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে ১৭০০ মিটার বাঁধ সংস্কারের কাজের সূচনাও করা হয়। একই সঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুরের দৌলতনগর এলাকার ফুলহার নদীর ৯৫ মিটার বাঁধ সংস্কারের কাজেরও শুভ সূচনা করা হয়েছে। এই সমস্ত কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।
মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, চাচোল মহকুমার রতুয়া সহ বেশ কয়েকটি এলাকার ফুলহার নদীর ভাঙ্গন সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে জানিয়েছিলাম। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এইসব এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের জন্য বাঁধ সংস্কারের অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।