সোমবার দুপুরে উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্য মেঘালয়ে পৌঁছে গেলেন তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা। শিলংয়ে প্রচন্ড ঠান্ডা। এদিন সাদা হাফস্লিভ জ্যাকেট গায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কালো ফুলস্লিভ জ্যাকেটে পড়ে মেঘালয়ে পৌছন অভিষেক। বর্তমানে মুকুল সাংমাদের দলবদলের সূত্রে সে রাজ্যে বিরোধী দল তৃণমূল। আগামী তিন মাসের মধ্যে মেঘালয়ে বিধানসভা ভোট হতে পারে। তারই প্রস্তুতিতে এদিন সে রাজ্যে মমতা-অভিষেকের যৌথ সফর বলে মনে করা হচ্ছে।
ত্রিপুরা দিয়ে বাংলার বাইরে সংগঠন বিস্তারে পা বাড়িয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। গত দেড় বছরে একাধিক সে রাজ্যে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাদ্যায়। কিন্তু, আগরতলা নগরনিগম ভোটে পরাজিত হয় জোড়-ফুল প্রার্থীরা। একজন জিতলেও সেও বিজেপিতে নাম লেখান। অন্যদিকে, গোয়া বিধানসভা ভোটেও তেড়েফুড়ে প্রচার করলেও খাতা খুলতে পারেনি মমতার দল। জুটেছে বিজেপির 'বি-টিম'এর অ্যাখ্যা। এসবের পরেও মেঘালয়ে দখলে মরিয়া তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। এই প্রথম ভিন রাজ্যে পৌঁছলেন মমতা-অভিষেক। কোন সমীকরণে ভর করে পাহাড়ি রাজ্যে আশার আলো দেখছে তৃণমূল?
মুকুল সাংমার নেতৃত্বে মেঘালয়ের ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে মুকুলকে ধরেই তৃণমূল পাহাড়ি রাজ্যে ভোটের অঙ্ক কষা শুরু রেছে। বাংলার শাসক দল সূত্রে খবর, নিজেদের বিপন্ন বলে দাবি করা ব্রু সম্প্রদায় সহ একাধিক জনজাতিদের মধ্যে মুকুল সাংমার প্রভাব রয়েছে। ৬০টির মধ্যে একাধিক আসনে এই জনজাতিরা ভোটের ফলের নির্ণায়ক শক্তি। তৃণমূল মনে করছে, মুকুল সাংমার নেতৃত্বে ভোট হলে মেঘালয়ে জয় সম্ভব।
উল্লেখ্য, মেঘালয়ে বিজেপির একার শক্তি নেই। জনজাতিভিত্তিক আঞ্চলিক শক্তির কাঁধে ভর করেই ক্ষমতাসীন জোটে থাকে গেরুয়া শিবির। আঞ্চলিক দলগুলোর জয়ের ভিত্তি সেই জনজাতি। যাঁদের ভোটকে এবার টার্গেট করছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন- ‘ডিসেম্বরের তিনটি তারিখের কথা বলেছি, সরকার পরিবর্তন হবে বলিনি’, ঢোঁক গিললেন শুভেন্দু
সোমবার মেঘালয়ে পৌঁছেই টুইটবার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, 'মেঘালয়ের মানুষ, আপনাদের ভালবাসা, উষ্ণতা এবং সমর্থনের জন্য আপনাদের সকলের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। মেঘালয়ের সুন্দর পার্বত সৌন্দর্যের প্রতীক এবং মানুষের মধ্যে সরলতা হৃদয়গ্রাহী। আমি রাজ্যে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে এখানকার মানুষ হেসে স্বাগত জানিয়েছেন, সেই আনন্দমুখর মুখগুলি আমার হৃদয়ে চিরকাল থাকবে। আমি রাজ্যের ইনচার্জ শ্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া, রাজ্য সভাপতি শ্রী চার্লস পিংগ্রোপ, বিরোধীদলীয় নেতা ডঃ মুকুল সাংমা, শ্রী জর্জ লিংডোহ এবং শ্রী জেনিথ সাংমাকে তাদের অমূল্য সময়ের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।'
'এ রাজ্যের সম্ভাবনা যাচাই করে মেঘালয়ের জনগণকে একটি সমৃদ্ধ জীবনযাপনের যোগ্য পরিস্থিতি তৈরির জন্য আমরা নিশ্চিতভাবে চেষ্টা করব, তাদের কথা শুনব, তাদের চাহিদা বুঝে সর্বদা তাদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেব। আমাদের যাত্রা সবে শুরু হয়েছে, আমাদের অনেক মাইল যেতে হবে। মেঘালয়ের একটি গৌরবময় ভবিষ্যতের জন্য, আমরা চেষ্টা করব!আমাদের অনেক মাইল যেতে হবে। মেঘালয়ের একটি গৌরবময় ভবিষ্যতের জন্য, আমরা চেষ্টা করব!'