প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ফের একবার পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া মেটানোর দাবি তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ভ্যাকসিনের ব্যবহার নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় মঙ্গলবার বাংলা সহ দশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানেই তাঁর দাবির কথা তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভার্চুয়াল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'জিএসটি খাতেই ক্ষতিপূরণবাাবদ রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও ৪,১৩৫ কোটি টাকা পায়নি। কেন্দ্রের থেকে বাংলার মোট প্রাপ্য ৫৩ হাজার কোটি টাকা।' যত দ্রুত সম্ভব এই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানান মমতা।
গত ২৭ জুলাই মোদী-মমতা একযোগে অনলাইনে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রের সূচনা করেছিলেন। সেই সময়ও রাজ্যের বকেয়া প্রাপ্যর দাবিতে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন যে, 'আমাদের অর্থনৈতিক বোঝা অত্যন্ত বেশি। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২,৫০০ কোটি টাকা খরচ করেছে। কেন্দ্রের থেকে বকেয়া অর্থেক কিছু অন্তত এখনই বাংলাকে দেওযা হোক।'
মঙ্গলবারের বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে রাজ্যের বকেয়ার যেমন দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তেমনই আর্জি জানিয়েছেন যাতে কেন্দ্র ভেন্টিলেটর ও হাই ক্যানুলাস অক্সিজেন ডিভাইস আরও বেশি করে বাংলাকে সরবরাহ করে। রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর হার বেশি বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এ প্রসঙ্গে কমমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে, 'বাংলায় করোনা মৃতদের ৮৯ শতাংশই আনুসাঙ্গিক রোগের কারণে মারা যাচ্ছেন। শুরুতে, আমরা মৃত্যুর নিরীক্ষণের উপর জোর দিয়েছিলাম, কিন্তু ক্রমেই উপলব্ধি করেছি যে কোভিডের মৃত্যুর ক্ষেত্রে আনুসাঙ্গিক রোগ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের রাজ্যে ৮৯ শতাংশের মৃত্যু হচ্ছে হৃদরোগের সমস্যা, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হাইপার টেনশনের মত কোমর্বিডিটির কারণে।'
করোনা মোকাবিলায় বাংলার সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমত্রী জানান, 'সরকারি ও গর্ভমেন্ট রিক্যুইজিশনড বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অ্যাম্বুলান্স পরিষেবা থেকে শুরু করে সব ধরনের চিকিৎসা হচ্ছে বিনামূল্যে। পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী বিমার সুবিধা পাচ্ছেন প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ রাজ্যবাসী। একশটির উপর সেফ হোম চালু করেছে রাজ্য সরকার। এছাড়াও টেলি মেডিসিন, টেলি সাইকোলজিক্যাল কাউল্সেলিং ব্যবস্থা রয়েছে।' এছাড়াও কোভিড প্যাসেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার বলেন, 'যেসব রোগী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাঁদের কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা রোজ রোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে থাকেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। আশা কর্মীরা ২,৫ লক্ষ বাড়িতে ৩০ কোটিবার গিয়েছেন। কারোন শ্বাসকষ্ট, জ্বর সহ কোনও করোনা উপসর্গ রয়েছে কিনা তা দেখছেন। আমরা কোরনা সচেতনতা বৃদ্ধিতে সেল্ফ হেল্প গ্রুপকে কাজে লাগিয়েছি।'
উল্লেখ্য, করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ব্যর্থ- ইতিমধ্যেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই ইস্যুতে মমতা সরকারকে তুলোধনা করছে। করোনা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতও নজরে পড়েছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন