এবারের শিল্প সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ধনধান্য অডিটোরিয়াম থেকে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন,২০২৩-য়ের শিল্প সম্মলনে মোট ৩ লাখ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। যা ছাপিয়ে গিয়েছে গতবারের পরিসংখ্যানকে। ২০২২ সালের শিল্প সম্মেলনে ৩.৪২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল। এবার তা বেশ খানিকটা বাড়ল।
মৌ চুক্তি সাক্ষরেও এবার নয়া নজির। গত বছরের শিল্প সম্মেলনে ১৩৭টি মৌচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১৪৪, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিপুল এই বিনিয়োগের প্রস্তাবে খুশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনকে 'স্বপ্ন পূরণ' বলে অখ্যায়িত করেছেন তিনি। বলেছেন, 'অনেকে স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ করা হয়তো সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। আমাদের স্ব্পন পূরণ হল। তবে কাজটা সহজ ছিল না।' এবারের শিল্প সম্মেলনে ৪০টি দেশের ৫ হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে শুধু ব্রিটেন থেকেই ৪০ জন ব্যবসায়ী অংশ নিয়েছিলেন। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ‘এই যেন গলা টিপে ধরবে’, শিল্পবান্ধব বার্তা দিতে কাকে নিশানা মমতার?
কর্মসংস্থানে আগাগোড়াই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উপর জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশের মধ্যে কর্মসংস্থানে নজির সৃষ্টিকারী বাংলার উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে শিল্প সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনেও বার্তা দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, 'ক্ষুদ্র কিন্তু সুন্দর। আজ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের দিন। রাজ্যে ৯০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে। চর্ম শিল্প ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। ভারতে যখন কর্মসংস্থানের হার ৪০ শতাংশ কমেছে তখন বাংলায় তা বেড়েছে ৪২ শতাংশ।'
সূত্রে খবর লগ্নি প্রস্তাবের বৃহৎ অংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে। এছাড়াও উৎপাদন, পরিকাঠামো, কৃষি ও কৃষিজ পণ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, পর্যটন সহ একাধিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মোদীর ক্যাশলেস ইকোনমি-কে এ দিন কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ক্যাশলেস ইকোনমি কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যর্থ। গ্রামই কর্মসংস্থানে দিশা দেখাচ্ছে বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেনছেন, 'কৃষি থেকেই সৃজনশীলতা, দিশা দেখাচ্ছে গ্রাম।' আগামীতে বাংলাই যে শিল্পের সেরা গন্তব্য হতে চলেছে তা এ দিনও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন এই দাবি? মুখ্যমন্ত্রী যুক্তি, বাংলায় দক্ষ শ্রমিক রয়েছে, জমি তৈরি, পরিকাঠামোও প্রস্তুত। বাংলাই দেশের উত্তর পূর্বের গেটওয়ে, সরকার শিল্পবান্ধব। তাই পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ করে শিল্প তৈরির সহায়ক।