সরকারি নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন। যা কাল হয়েছে কেতুগ্রামের তরুণী রেণু খাতুনের। সন্দেহের বশে স্বামী তাঁর হাত কেটে নিয়েছেন। অনেক দেরি হওয়ায় কাটা হাত আর জুড়বে না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অসহায় রেণু। তবু জীবনযুদ্ধে পিছপা হতে রাজি নন তিনি। অদম্য সাহসে ভর করে নার্সিংহোমের শয্যাতে বসেই বাঁ হাতে লেখার চেষ্টা জারি রয়েছে তাঁর। যা সবটা নজরে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তারপরই বুধবার বিকেলে ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে মানবিক ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisment
রাজ্য সরকার রেণু খাতুনের পাশে রয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, রেণুর পাওয়া নার্সিংয়ের সরকারি চাকরিটি বজায় থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'কেতুগ্রামের মেয়েটির নার্সিংয়ের প্যানেলে ২২ নম্বরে নাম ছিল। ওর ডান হাত স্বামী কেটে দিয়েছে। কিন্তু বাঁ হাতে বসে ও যে কাজ করতে পারে আমরা সেই কাজই ওকে দেব।'
এছাড়া, রাজ্য সরকারের তরফে রেণুকে কৃত্রিম হাত দেওয়া হবে বলেই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আপাতত নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রেণু খাতুন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড কাজে লাগেনি। এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৫৭ হাজার টাকা। ওই টাকা সরকার দিয়ে দেবে। সঙ্গে কেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ করেনি সেটাও খতিয়ে দেখার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেতুগ্রামের রেণু খাতুনের সঙ্গে দেখা করতে রাজ্য সরকারের তরফে নারী সুক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় যাবেন বলেও জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকারি নার্সের চাকরি পেয়ে যাওয়ায় স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারে। এই আশঙ্কায় রেণু খাতুনের স্বামী সরিফুল শেখ গত শনিবার রাতে স্ত্রীর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁর কব্জি থেকে হাতের নীচের অংশ কেটে দেয়। এরপর রেণুকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। অনেক দেরি হওয়ায় কাটা হাত আর জুড়বে না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। হাত হাড়িয়ে আর সরকারি চাকরি সে পাবে কিনা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। যার উত্তর মিলল বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক ঘোষণায়।