পাখির চোখ একুশের নির্বাচন। ভোট বৈতরণী পার করার লক্ষ্যে উন্নয়নের কাজ বন্ধ রাখা যাবে না। কিন্তু করোনার জেরে দীর্ঘদিন জেলা সফর বন্ধ রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলত, রিভিউ করার অবকাশও ছিল না। এবার কাজ খতিয়ে দেখতে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বোঝাই যাচ্ছিল, নির্বাচনের আগে ফেলে রাখা প্রশাসনিক কাজকর্মে গতি আনার জন্য আধিকারিকদের বলবেন মমতা। মঙ্গলবার হলও তাই। উত্তরকন্যাতে প্রশাসনিক বৈঠকের শুরু থেকেই ফ্রন্টফুটে খেললেন মুখ্যমন্ত্রী। উন্নয়নের কাজ যেন কোনওভাবে আটকে না থাকে। ১০০ শতাংশ রেজাল্ট চাই, সাফ জানিয়ে দিলেন উচ্চপদস্থ কর্তাদের। আদিবাসী অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে যাতে মানুষের উন্নয়নের কোনও কাজে গাফিলতি না হয় এবং দ্রুত যেন শেষ করা হয় তার জন্য কড়া ভাষায় বার্তা দিলেন মমতা। বললেন, "ইনস্পেক্টর রাজ বেশি চলছে। জনস্বার্থে কাজ বেশি চাই। সবকিছু খোলনলচে বদলে দেব। ১০০ পার্সেন্ট কাজ চাই, ১০০ পার্সেন্ট অভিযোগের সমাধান করতে হবে।"
উদ্বাস্তুদের জমি সমস্যা থেকে শ্রম দপ্তরে জমা অভিযোগ, তফসিলি জাতি-উপজাতির শংসাপত্র, সবকিছুই যেন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়। আগামী তিন মাসের মধ্যে দুই জেলার সব কাজ শেষ করার জন্য ডিএম-এসডিও-বিডিওদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের অর্থদপ্তর টাকা দেওয়া সত্ত্বেও অনেক জায়গায় কাজ হচ্ছে না বলে রিপোর্ট পেয়েছেন মমতা। সেই রিপোর্ট নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের ক্লাস নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজ আটকালে বা কাজে ঢিলেমি দেখালে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সেই হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। প্রত্যেক দপ্তরে ১০০ শতাংশ চান বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গে কল্পতরু মমতা
এদিকে, "পঞ্চায়েতের কাজকর্মে ঢিলেমির জন্য জেলা সভাধিপতিদের উপর রুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, জেলা সভাধিপতিরা কী করছে, কাজগুলো পড়ে থাকছে কেন? ডিএম-বিডিওদের সঙ্গে কথা বলে কাজগুলো শেষ করুন।" এদিন বিধায়কদের সঙ্গেও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ধরে ধরে কথা বলেন মমতা। তবে এদিন বৈঠকের তাল কাটে মাইক্রোফোন বিভ্রাট। মুখ্যমন্ত্রীর কথা বেশ কিছুক্ষণ শুনতে না পেয়ে সমস্যার কথা বলেন সাংবাদিকরা। তাতে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের সাউন্ড সিস্টেমের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের উপর ক্ষুব্ধ হন। আগামিকাল, বুধবার উত্তরের আরও তিন জেলা দার্জিলিং, কোচবিহার ও কালিম্পংয়ের রিভিউ বৈঠক করবেন মমতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন