মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনায় শেষ পর্যন্ত বেকসুর খালাস হলেন অভিযুক্ত লালু আলম। প্রায় ৩০ বছর পর এ মামলার নিষ্পত্তি হল। ১৯৯০ সালে কলকাতার হাজরা মোড়ে তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। যে ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছিল লালু আলমকে। শেষমেশ সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে এ মামলায় লালু আলমকে বেকসুর খালাস করল আলিপুর আদালত।
আরও পড়ুন: ‘মমতা গ্রেফতার হবেন ৮ কোটি টাকা চুরির দায়ে’
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনায় ১২ জনের নামে চার্জশিট দায়ের করা হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে কেউ মারা গিয়েছেন, নয়তো কেউ পলাতক। একমাত্র লালু আলমই অভিযুক্ত হিসেবে রয়েছেন। অন্যদিকে, এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও আর নেই। ফলে লালু আলমের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তার কোনওটাই আদালতে প্রমাণ হয়নি। তাই সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন থাকা এই মামলার নিষ্পত্তি করল আদালত। উল্লেখ্য, এ মামলায় ১৯৯৪ সালে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন মমতা। গত ২১ অগাস্টও মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আদালতে সেই পরিকাঠামো না থাকায় এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।
আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিতে চান অনুব্রত মণ্ডল! চাঞ্চল্যকর দাবি বিজেপি সাংসদের
বেকসুর খালাস হওয়ার পর কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন লালু আলম। সংবাদমাধ্যমে তিনি শুধু বললেন, ‘‘কী করে বোঝাব কেমন লাগল। ৩০ বছরের একটা জিনিস মিটে গেল। আনন্দ তো হচ্ছেই। বলার কোনও ভাষা নেই’’। সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘এ মামলায় অনেক সাক্ষীরা মারা গিয়েছেন, আসামীরও মারা গিয়েছেন, কেউ পলাতক। মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতো ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়নি। তাই রাজ্য সরকার ঠিক করে, এ মামলার ভবিষ্যৎ নেই, তাই নিষ্পত্তি করা হল’’।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালের ১৬ অগাস্ট কলকাতার হাজরা মোড়ে মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। সে সময় যুব কংগ্রেসনেত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার মাথায় লাঠি মারার অভিযোগ উঠেছিল লালু আলমের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে পরে মমতা জানিয়েছিলেন, সেদিনের মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে মাকে না বলেই গিয়েছিলাম। ওই একবারই মাকে না বলে বেরিয়েছিলাম।