/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/28/IvyxiUKwW35RDShyDI3F.jpg)
Mamata Banerjee: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
'প্লিজ ,বিজেপির ’’ললিপপ’ হবেন না' ! মঙ্গলবার বর্ধমানের প্রশাসনিক সভা থেকে নির্বাচন কমিশন কে কটাক্ষ করে এমনই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সভাথেকে মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ’বাংলার সব চোর’, এই কথা বলার জন্য।
এরই পাশাপাশি ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশী বলে দাগিয়ে দিয়ে হেনস্থা করা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী এদিন তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন।
বছর ঘুরলেই এই রাজ্যে হবে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের এস আই আর(SIR)চালু নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে।এ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে রাজ্যকে
চিঠি লিখে জানিয়েও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যে কোন সময়ে এই রাজ্যে এসআইআরের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যেতে পারে।তবে এসআইআর নিয়ে রাজ্য তার আপত্তির কথা জানিয়ে রেখেছে । শুধু বিরোধী শাসিত রাজ্য গুলিতে কেন এসআইআর সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বঙ্গের শাসক দল ।
যদিও বঙ্গ বিজেপি এই রাজ্যে এসআইআর কার্যকর করার দাবিতে সওয়াল জারি রেখেছে। বাংলার ভোটার তালিকায় লাখ লাখ ভুতুড়ে ভোটার রয়েছে এমন দাবির কথা কমিশনেও জানিয়েছে বঙ্গ বিজেপি।
এই নিয়েই বর্ধমানের প্রশাসনিক সভা থেকে এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন,নির্বাচন কমিশন- আপনাকে অনেক প্রণাম জানাই, সালাম জানাই। প্লিজ- বিজেপির ললিপপ হবেন না। আমাকে ভয় দেখিয়ে কিছু লাভ হবে না বলেন মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন ।
নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও এদিন তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন,নির্বাচনের আগে বার বার আসছেন ।প্রধানমন্ত্রী কেন বলবেন, “বাংলায় সব চোর“ ,তাই আমি টাকা বন্ধ করেছি। বাংলায় ১৮৬ টা টিম পাঠিয়ে ছিল।সব তথ্য দেওয়া হয়েছিল,সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও বাংলার নামে মিথ্যা বলা হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন,” উত্তরপ্রদেশ , মহারাষ্ট্র ও বিহারের ডবল ইঞ্জিন সরকার তো সব থেকে বড় চোর ।এই চোর গদ্দারদের নিয়ে মিটিং করে বাংলকে চোর বছেন? বাংলার অপমান নিয়ে এদিন কার্যতই সুর চড়া রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, আমি বাংলার অপমান সহ্য করবো না। আমি লড়ে নেব । "
ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বাংলায় কথা বলার জন্য বাংলার পরিযায়ী শ্রমকদের হেনস্থা ও অত্যাচার করা নিয়ে এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেন, ভাষা সন্ত্রাম মানবো না ।একই সঙ্গে তিনি বলেন,বাংলায় দেড় কোটি ভিন রাজ্যের মানুষ আছেন। আমরা কখনো তাদের উপর অত্যাচার করি নি। তাহলে কেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার । পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফিরে আসার জন্য বর্ধমানের প্রশাসধিক সভা থেকে আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। সভা থেকে তিনি ঘোষণা করেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ’শ্রমশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলায় ফিরে আসলেই ৫ হাজার টাকা দেব। এছাড়াও যতদিন না কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে ।
স্বাস্থসাথী ও খাদ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধাও পরিযায়ী শ্রমিকরা পাবে । পরিযায়ী শ্রমিকদের বাচ্চাদের এখানকার স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা আমরা করেদেব। কর্মশ্রী প্রকল্পে স্কিল ট্রেনিংও দেওয়া ছাড়াও বাংলায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমীকদের সহজে লোন পাওয়ার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
বিধানসভা ভোটের আগে দুই বর্ধমান জেলাকে নিয়ে এদিন বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে একপ্রকার কল্পতরে রুপেই দেখাগেল মুখ্যমন্ত্রীকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও সুবিধা প্রদান করেন । গোটা রাজ্যের যে ১২ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীকে পুণরায় ’সবুজ সাথীর’ সাইকেল দেওয়া হবে তার সূচনা এদিন মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমান থেকে করে । মুখ্যমন্ত্রী জানান ,এদিনই বর্ধমান থেকে ৫ হাজার ছাত্র ছাত্রীকে ’সবুজ সাথীর’ সাইকেল প্রদান করা হবে।নতুন করে আরো ৭২ হাজার জন মহিলাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিবা প্রদাান ও ২৪ হাজার জনকে জমির পাট্টা প্রদানের সূচনাও এদিন মুখ্যমন্ত্রী করেন।এছাড়াও মাটির বাড়িতে বসবাস করা রাজ্যের আরো কত সংখ্যক পরিবার সরকারী আর্থিক সুবিধা পাবে , কোথায় কোথায় নতুন রাস্তা ও অন্যান প্রকল্পের কাজ হবে তা মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দেন ।