মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরও রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনিকস্তরে একাধিক রদবদল করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদর্শ আচরণবিধি জারি হওয়ার পর রাজ্য পুলিশের ডিজি-এডিজি আইনশৃঙ্খলা পদ থেকে বীরেন্দ্র ও জাভেদ শামিমকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তাঁদের পুনর্বহাল করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য পুলিসের ডিজি-র পদে ফিরিয়ে আনা হল বীরেন্দ্রকে। এডিজি আইনশৃঙ্খলায় ফিরলেন জাভেদ শামিম। নবান্ন সাংবাদিক বৈঠকেই সেই কথা ঘোষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। ডিজি বীরেন্দ্রকে সরিয়ে নীরজয়ন পান্ডেকে এনেছিল নির্বাচন কমিশন ও জগমোহন করা হয় এডিজি আইনশৃঙ্খলা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেছেন, 'ডিজি হয়েছেন পুরনো ডিজি বীরেন্দ্রর। তাঁর মে মাসে রিটায়ারমেন্ট আছে। সুতরাং কয়েকদিনের জন্য তাঁকে ফিরিয়ে দিলাম। জাভেদ ছিল এডিজি আইনশৃঙ্খলা। তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যিনি ডিজি ছিলেন তাঁকে ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব দিচ্ছি। আর এডিজি আইনশৃঙ্খলাকে সিভিল ডিফেন্সে পাঠানো হচ্ছে।'
এছাড়া, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও পুলিয়ার জেলা শাসককেও। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পদে কর্মরত ছিলেন স্মিতা পাণ্ডে। তাঁর জায়গায় এই জেলার জেলা শাসক করা হয়েছে পূর্ণেন্দু মাঝিকে। vন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনার পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৎকালীন জেলাশাসক বিভু গোয়েলকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। জেলাশাসক হিসেবে নিয়ে আসা হয় স্মিতা পাণ্ডেকে। রাহুল মজুমদার হয়েছেন পুরুলিয়ার নতুন জেলা শাসক।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের সিকিউরিটি ডিরেক্টর পদে ফের পুনর্বহাল করা হচ্ছে বিবেব সহায়কে। গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে প্রচারের সময় পায়ে গুরুতর চোট পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা ঘিরে কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। 'ষড়যন্ত্রে'র অভিযোগ তোলেন তিনি। যদিও কমিশন মমতার তোলা সব দাবি নস্য়াৎ করে দেয়। কিন্তু, ওই দুর্ঘটনার রাজ্যের নিরাপত্তা আধিকারিকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিবেক সহায়কে। তাঁর বিরুদ্ধে বিবাগীয় তদন্তও চলছে। কিন্তু, ক্ষমতায় ফিরতেই বিবেক সহায়কে বাংলার সিকিউরিটি ডিরেক্টর পদে পুর্বহাল করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে এদিন শপথের পরই রাজভবনে দাঁড়িয়ে কড়াবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেউ হিংসা ছড়ালে কোনও অবস্থাতেই রেয়াত নয় বলে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। এপ্রসঙ্গে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিজেপি যেখানে জিতেছে সেখানেই অত্যাচারের ঘটনা বেশি হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো বন্ধের জন্য পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'