Mamata Banerjee: তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রাজ্যকে শিল্প<বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে দেউচা-পাচামি এবং অশোক নগরজুড়ে বিনিয়োগের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এই দুই জায়গায় বিপুল কর্মসংস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে এমনটাই কবর। এবার একদা শিল্প শহর হাওড়াকে ফের বিনিয়োগবান্ধব করতে বুধবার উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই উদ্যোগে কেউ বাধা হলে, তাঁকে রেয়াত করা চলবে না। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে ঠারেঠরে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার হাওড়া জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই বৈঠকে বিনিয়োগের জন্য জমি জটের প্রসঙ্গ ওঠে। ভূমি সংস্কার দফতরের সচিবের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেকে ইচ্ছা করে দেরি করাচ্ছে। আগে ইউনাইটেড ক্লিয়ারেন্স সিস্টেম ছিল। সেটা এখন কার নির্দেশে বন্ধ আছে? কারা এত বড় নেতা হয়েছে দেখি! দুই বছর ধরে কাজে দেরি করলে শিল্প হবে কী করে?’ মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রসঙ্গের ভূমি দফতরের সচিব আগামি দুই বছর ধরে চলা কোভিড পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এই নিয়ে দফতরের অভ্যন্তরীণ বৈঠক হয়েছে বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন ওই আমলা।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র ভর্ৎসনার মুখে তাঁরই দলের বিধায়ক। ‘খবরদার, এটা কখনও করবে না।’ বৃহস্পতিবার হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীকে এভাবেই ধমক মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ের। এলাকায় জল জমে থাকার প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে রাস্তায় বসে পড়েছিলেন উত্তর হাওড়ার এই বিধায়ক। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় খোদ তৃণমূল বিধায়কের দল পরিচালিত পুরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধাচরণ রীতিমতো ভাইরাল হয়। সেই ঘটনার উল্লেখ করে এদিন এই বিধায়ককে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুজোর মরশুম মিটতেই জেলায়-জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ হাওড়া জেলায় প্রশাসিক বৈঠকে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে নিজেদের এলাকার একাধিক সমস্যা-অভাবের কথা তাঁকে জানান বিধায়করা। সমস্যা সমাধান কীভাবে করা যাবে সেব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শও তাঁদের দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এভাবেই এরপর বলার পালা আসে উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর। এই গৌতম চৌধুরীই মাসখানেক আগে তাঁর বিধানসভা এলাকায় জল জমে যাওয়ার কারণে প্রতিবাদ দেখিয়েছিলেন। হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীকে কাঠগড়ায় তুলে রাস্তায় চেয়ার নিয়ে বসে পড়েছিলেন তিনি। এদিন গৌতম চৌধুরী বলতে শুরু করলেই তাঁকে থামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়কের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তুমিই গৌতম চৌধুরী? রাস্তায় বসে পড়েছিলে কেন?’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রশ্ন শুনে হতচকিত গৌতমবাবু জানান, রাস্তায় জল জমে যাওয়ার কারণেই তিনি বসে পড়েছিলেন। তাঁর এই উত্তরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল বলে বসে পড়বে? প্রকৃতি কি আমাদের হাতে রয়েছে? এবার যা বৃষ্টি হয়েছে গত ৮০ বছরেও হয়নি। সাহায্য করার বদলে রাস্তায় বসে পড়লে? তৃণমূলের একটা কালচার আছে। খবরদার, এগুলো করবে না।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন