Advertisment

তৃণমূলের ওয়েটিং-লিস্টে থাকা শোভনের নাম মমতার মুখে, বছর শেষে কীসের ইঙ্গিত?

নেত্রীর প্রশংসার পর কী বললেন শোভন চট্টোপাধ্যায়?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mamata banerjee greets ex kolkata mayor sovan chatterjee for taratala joka metro project, তারাতলা জোকা মেট্রোর উদ্বোধনের দিন মমতা ব্যানার্জীর মুখে শোভন চ্যাটার্জীর নাম

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়।

প্রিয় কাননের প্রতি তাঁর স্নেহ যে অটুট শুক্রবার হাওড়ায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী বক্তৃতায় বোঝালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisment

আপাতত রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু, এ দিনই প্রধানমন্ত্রী হাতে উদ্বোধন হওয়া তারাতলা-জোকা মেট্রো প্রকল্পের বাস্তবায়ণে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের বিরাট ভূমিকার কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের বক্তব্যে তৎকালীন কলকাতার মেয়রের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান। বলেন, 'সে সময় শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রকল্পের সমস্ত জমির সংস্থান করেছিলেন। আজ তাই তাঁকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। ধন্যবাদ নগোরন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও।'

নেত্রীর মুখে নিজের প্রশংসা শুনে যারপরনাই খুশি শোভন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে কলকাতার বাইরে তিনি। ফোনে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। মেট্রোর জন্য বেহালার মানুষ উপকৃত হবেন। দিদি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই রুটের ৭৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও প্রকল্পের টাকা আটকানোয় এত বছর লাগল। তবে এটা ভালো যে প্রধানমন্ত্রীর হাতে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই মেট্রো চালু হল।'

ইউপিএ সরকারের আমলে ২০১০ সালে রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলকে এনে তারাতলা-জোকা মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করিয়েছিলেন তিনি। ১২ বছর আগে সেসময় কলকাতার মেয়র ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।

রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই মমতা ঘনিষ্ঠ ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই কানন (শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ডাক নাম, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ওই নামেই ডাকেন) মমতার দলে। পরে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কলকাতার মেয়র, বিধায়ক ও মন্ত্রীও করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অনুগত হওয়ায় সবসময়ই মমতার চোখে গুরুত্ব পেয়ে এসেছেন আপাতত রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় শোভনবাবু।

আরও পড়ুন- হাওড়ায় মমতা যেতেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান, উদ্বোধনী মঞ্চে গেলেন না ‘বিরক্ত’ মুখ্যমন্ত্রী

ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে ২০১৮ সালে শোভনের থেকে মন্ত্রিত্ব ও মেয়র পদ কেড়ে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯-এর অগাস্টে তৃণমূল ছেড়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে নাম লেখান। একইসঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু শুরু থেকেই বিজেপিতে স্বস্তিতে ছিলেন না তাঁরা। দলের দেওয়া পদ নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন শোভন-বৈশাখী। ফলে মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা বিষোদগার করলেও ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগেই বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গ রাজনীতির এই রংমিলান্তি জু

একুশের ভোটে বিজেপি পরাজিত হওয়ার পর থেকেই শোভন-বৈশাখীর মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল। যা অব্যাহত ছিল। এরপর ২২য়ের জুনে হঠাৎই মমতার সঙ্গে সাক্ষাতে নবান্নে পৌঁছে যান তাঁরা। প্রায় ১ ঘণ্টা মমতা সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শোভন-বৈশাখী। শুরু হয় শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখীর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা। যদিও জোড়-ফুলে এখনও তাঁদের ফেরা হয়নি। শোভন সবটাই প্রিয় 'দিদি'র সিদ্ধান্তের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন।

এই পরিস্থিতিতে এদিন মেট্রোর উদ্বোধনে মমতার মুখে অতি ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে শোনা গেল শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম। অর্থাৎ শোভনের গুরুত্ব যে তাঁর কাছে রয়েছে এখনও সেটাই স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে কী এবার রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় কানন সক্রিয় হয়ে তৃণমূলে ফিরছেন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, সবুজ সঙ্কেতের সেই ইঙ্গিতের দিলেন নেত্রী।

tmc Mamata Banerjee Howrah Sovan Chatterjee Sovon-Baisakhi Vande Bharat
Advertisment