কথা দিলে তা রক্ষা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায়ই তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা উদাহরণ তুলে সেই দাবি করে থাকেন। ফের একবার মমতার প্রতিশ্রুতি রক্ষার খবর সামনে এলো।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই নন্দীগ্রামের তেখালিতে গিয়ে সভা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভাতেই তিনি একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তেলাখিতেই মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ভবানীপুর যদি তাঁর বড় বোন হয়, তবে নন্দীগ্রাম মেজ বোন। পাশাপাশি বলেছিলেন, হলদি নদীর ওপর হলদিয়া-নন্দীগ্রাম সংযোগকারী সেতু তৈরির কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাতেই আশায় বুক বেঁধেছে হলদির একপাশে শিল্পশহর হলদিয়া ও অন্য পাড়ের কৃষি নির্ভর নন্দীগ্রামের মানুষ।
ভোটের ফলে নন্দীগ্রাম থেকে পরাজিত (যদিও আদালতে বিচারাধীন) তৃণমূল সুপ্রিমো। 'বড় বোন' ভবানীপুর মান রক্ষা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু, খালি হাতে ফেরালেও 'মেজ বোন' নন্দীগ্রামে ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী।
২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেট বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলদি নদীর উপরে নন্দীগ্রাম এবং হলদিয়াকে জুড়ে দেওয়ার জন্য সেতু তৈরির কথা ঘোষণা করেন। বর্তমানে সেই ঘোষণার অগ্রগতি কতদূর? শুক্রবার টুইটবার্তায় সেই খবরই দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
শুভেন্দু অধিকারীর গড় পূর্ব মেদিনীপুরে জন্য তৃণমূলের তরফে কুণাল ঘোষকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিন টুইটে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, 'পূর্ব মেদিনীপুরকে নতুন উপহার। নির্বাচনের সময়ে দেওয়া কথা রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হলদিয়া এবং নন্দীগ্রামের মধ্যে তৈরি হবে সেতু। ডিপিআর তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একটু সময় লাগলেও বিপুল সংখ্যক মানুষের উপকার হবে। রেল, হাসপাতাল, বিভিন্ন উন্নয়ন স্কিমের পর এটি নতুন উপহার।'
হলদির একদিকে নন্দীগ্রাম, অন্য দিকে হলদিয়া। কর্মসূত্রে বা অন্যে যেকোনও কোনও প্রয়োজনে দুই পাড়ের বাসিন্দা নিয়মিত দু’দিকে যাতায়াত করেন। সড়কপথে নন্দকুমার দিয়ে ঘুরপথে এক প্রান্ত থেকে অন্যদিকে যেতে হয়। এছাড়া দুই পাড়ের যোগাযোগের ভরসা ফেরি পরিষেবা। যাতে অনেক সময় লাগে ও ঝুঁকিপূর্ণও। প্রস্তাবিত সেতু তৈরি হলে দুই পাড়ের মানুষেরও উপকার হবে।
উল্লেখ্য, বাম আমলে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের সম্প্রসারণে কথা বিবেচনা করে নন্দীগ্রামকে যুক্ত করার কথা ভাবা হয়েছিল। তার জন্য হলদি নদীতে একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সে সময় হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান লক্ষ্মণ শেঠ সেতু তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তবে ২০০৫ সালের ওই পরিকল্পনার বাস্তবায়িত হয়নি।