জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধনে এসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের বঞ্চনার অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মমতা বলেন, "আগে আমাদের এখানে ৮৮টি ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট ছিল। পরে কেন্দ্রীয় সরকার সব বন্ধ করে দেয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের খরচায় সেগুলো চালানো হচ্ছে। এই ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতগুলোর মধ্যে ৫৫টিই মহিলাদের জন্য।" সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "১৯৮৮ সালে ভাবনাচিন্তা হয়েছিল। প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য ২০১২ সালে শিলান্যাস করেছিলাম। সব ভাল যার শেষ ভাল। যাই হোক, কোনও বিতর্ক চাই না। তবুও বলব, হয়তো আগেই হয়ে যেতে পারত সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন। দীর্ঘদিনের ইচ্ছেপূরণ হল। আপনাদের মুকুটে বড় অলঙ্কার জুটল।"
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত বাঁধে। গত মাসেই ময়নাগুড়ির সভা থেকে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করে মোদী বলেছিলেন, "সার্কিট বেঞ্চের আবেদন এতদিন মঞ্জুর করেনি। এবার থেকে আর উত্তরবঙ্গের মানুষকে কলকাতা ছুটতে হবে না।"
আরও পড়ুন, ভোটের আগে উনি চাওয়ালা, ভোটের পর রাফালওয়ালা: মমতা
এই মন্তব্য নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। সেসময় মোদীকে বিঁধে মমতা বলেছিলেন, "ওঁকে নিয়ে কথা বলতে আর ভাল লাগে না। লজ্জা লাগে। শূন্য কলসি বড্ড বেশি বাজে। সার্কিট বেঞ্চ হাইকোর্টের, অথচ উদ্বোধনে কেন কোনও হাইকোর্টের বিচারপতিকে দেখা গেল না? কেন রাজ্য সরকারকে বলা হল না? সার্কিট বেঞ্চের জন্য আমরা জমি দিয়েছি। টাকাও দিয়েছি। একটা টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। বর-কনে নেই, অথচ ব্যান্ড পার্টি এসেছে, এটা নির্বাচনী ব্যান্ড। এর থেকে বড় লজ্জা আর কিছু নেই।" মোদীকে আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, "গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল! ভোটের সময় রাজনীতি করতে এসেছেন।"
অন্যদিকে, বিচার ব্যবস্থার ভূমিকা নিয়ে মমতা বলেছেন, "ছোট মুখে বড় কথা শোভা পায় না। আমি নিজেও একজন আপনাদের গোত্রেরই লোক। হয়তো সুযোগ পাই না তাই প্র্যাক্টিস করতে পারি না। আমিও আইনজীবী বলে বলছি, বিচারের জন্য মানুষের ঘুরতে ঘুরতে পা ব্যথা হয়ে যায়। সুতরাং আরও মসৃণ হোক বিচারব্যবস্থা। সঠিক সময়ে যেন বিচার পান মানুষ। দ্রুত বিচার দেওয়া হোক। এজন্য পরিকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। বিচারপতির সংখ্যা বাড়াতে হবে। আইনজীবীদের আরও দক্ষ হতে হবে। আগামী দিনে পুরনো আদালতগুলোর আধুনীকিকরণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।" অন্যদিকে, আদালতে আঞ্চলিক ভাষায় সওয়াল করার কথাও এদিন বলেছেন মমতা।