দিন কয়েক আগেই টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন নিয়ে মুখ খুলতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, বৃহস্পতিবার নীরবতা ভাঙলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, 'আমি পুরোটা জাানি না, তবে আমি ন্যায্য আন্দোলনকারীদের ভালোবাসি।'
চারদিন ধরে সল্টলেকে চাকরির দাবিতে আন্দোলনে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা। বিরোধী দল বিজেপির রাজ্যসভাপতি ইতিমধ্যেই ধরনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে মমতা সরকারকে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত মজুমদার। টেট প্রার্থীদের আন্দোলন নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম।
এই পরিস্থিতে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মিখ্যমন্ত্রী বললেন, 'আমি পুরোটা জাানি না, যা বলার ব্রাত্য বলবে। আমি ন্যায্য আ্দোলনকারীদের ভালোবাসি। কোর্ট কেস চলছে। কোর্টের অর্ডারকে সম্মান করতে হয়। আমি চাই কারোর চাকরি যেন না যায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমি খুশি।'
উল্লেখ্য, ২০১৪-র প্রাথমিক টেট দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই তদন্ত চলছে। ওই বছর নিয়োগপ্রাপ্ত ২৬৯ জনকে প্রাথমিক শিক্ষকের পদ থেকে বরখাস্ত ও বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সেই শুনানিতেই ২৬৯ জনের বরখাস্ত হওয়ার নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
অন্যদিকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। টেট আন্দোকারীদের মধ্যে আমরা-ওরা বিভাজন নজরে পড়েছে। এ দিন থেকে সল্টলেকের ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে আন্দোলনে বসলেন ২০১৭-র টেট প্রার্থীরা। আন্দোলনরত ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের দাবি সঠিক নয় বলে দাবি ২০১৭ সালের টেট প্রার্থীদের। এই বিভাজনের জন্য পর্ষদ দায়ী বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এটা বিরোধীদেরই জিজ্ঞাসা করুন।'
২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের কী দাবি?
২০১৪ সালের বিক্ষোভকারী টেট উত্তীর্ণদের দাবি, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের সঙ্গে তাঁরা অংশ নেবেন না। তাঁদের সরাসরি নিয়োগ করতে হবে। কারণ, পয়েন্ট স্কোরে ২০১৭ সালের উত্তীর্ণদের থেকে ২০১৪ সালের পাস করা পরীক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়তে পারেন।
চাকরিপ্রার্থীদের কথায়, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁদের নিয়োগের কথা ঘোষণাও করেছিলেন। প্রথমে ১৬ হাজার ৫০০ পদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল, জানানো হয়েছিল পরে আরও কিছু পদে নিয়োগ হবে। অভিযোগ, তার পরে ২ বছর পেরিয়ে গেলেও নিয়োগ হয়নি, উপরন্তু ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের যুগ্মভাবে ১১ হাজার পদে নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৭ সালের প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসলে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের চাকরির সুযোগ অনেকটাই কমে যাচ্ছে।