শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম অবস্থা। তদন্ত যথ এগোচ্ছে ততই একের পর চাঞ্চল্যকর দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে। এসবের মধ্যেই মঙ্গলবার মালদহের সরকাররি সভা থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। 'কীসের বিনিময়ে সেই কোটা' তা অবশ্য খোলসা করতে চাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও দলত্যাগীদের 'ডাকাত'ও 'গদ্দার' বলে তোপ দেগেছেন তিনি। ফের বলেছেন, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তিনি কোনওদিন কোনও কথা বলেননি। তবে অন্যায় করলে তার দায় সরকার বা শাসক দল নেবে না।
Advertisment
এদিন নিজেই দুর্নীতির বিষয়টি উত্থাপন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই দলত্যাগীদের আক্রমণ শানান। বলেন, 'আমি একদিকে খুশি কারণ আমার দল থেকে কয়েকটা ডাকাত গদ্দাররা বিদায় নিয়েছে। এই ডাকাত গদ্দাররাই এইসব করেছিল। ওরা পুরুলিয়ার কোটাটাই কেটে দিয়েছিল। একসময় দেখলাম পুরুলিয়ার ছেলে-মেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না। মাননীয় আদালতকে দু’পাায়ে প্রণাম করে একবার বলব একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন- অন্যরা অন্যায় করলে নিশ্চই ব্যবস্থা নেবেন আমরা ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী। কিন্তু একবারও জেনেছেন যিনি আজ সর্বস্ব বিশারদ হয়ে বলে দিচ্ছেন ১০০ দিনের টাকা, আবাসন, রাস্তার টাকা দেবে না, যেন নিজের পকেটের টাকা দিচ্ছে। জনগণ করের মাধ্যমে সব টাকা দেয়। সব টাকা আপনি দেবেন আর ওরা মাছের তেলে মাছ ভাজছে।'
মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, 'মনে রাখবেন পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েদের টোটাল বঞ্চিত করা হয়েছিল। পুরলিয়ার কোটা কেউ কেউ নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন। কীসের বিনিময়ে নাই বা বললাম। তারপর আমি বলললাম কেন পুরুলিয়া বঞ্চিত হবে। সব জেলারই একটা কোটা থাকে। ওখানকার ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছিল। তারপর আমি উদ্যোগ নিয়ে কোটা বাড়িয়ে ওদের কাজের ব্যবস্থা করে দিলাম।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডির হেফাজতে তৃণমূলের যুব শাখার সাধারণ সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। গারদে ঠাঁই হয়েছে শিক্ষাক নিয়োগের সঙ্গে যুক্থ একাধিক আধিকারিকের। মমতার দাবি, 'যখন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল আমি তখন কোনওদিন কিছু বলিনি। কারণ আমার বলা শোভা পায় না আদালতে কেস চলছে। আমি আশা করি ভালো বিচার হবে। সাময়িকভাবে কেউ কাউকে ভুল বুঝতেই পারেন। তবে অন্যান করলে আমরা কেউ তার দায় নেব না।'
অতীতে শুভেন্দু অধিকারী সহ সব দলত্যাগীদেরই 'গদ্দার' বলে সম্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেছেন, দলের কয়েকটি জেলার রাশ অধিকারী পরিবারের হাতে দিয়ে ভুল করেছেন তিনি। কোটা দুর্নীতি অভিযোগ সামনে এনে কী মুখ্যমন্ত্রী আদতে একই নিশানায় আঘাত হানতে চাইলেন? আপাতত এই প্রশ্নেই জো চর্চা।