অনেকেই চাইছে সীমান্ত দিয়ে লোক ঢোকাতে। বাংলাকে ভাল থাকতে দেবে না। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিতে গিয়ে শুক্রবার এই আশঙ্কার কথা বললেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলাশাসক এবং এসপিদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে শিলিগুড়ি, উত্তর ২৪ পরগণার মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে আরও শক্তহাতে লকডাউন পালন করতে হবে।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে শুরু থেকেই রণংদেহী মেজাজে ছিলেন মমতা। সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "শিলিগুড়িতে অনেক বাইরের লোক যাতায়াত করে। ওটা সীমান্ত এলাকা। তাই ওখানে লকডাউন আরও কঠোরভাবে পালন করতে হবে। যে যতোই লাটসাহেব হোক, যার যতোই পেয়ারের লোক হোক, সীমান্ত থেকে কাউকে ঢোকানো যাবে না। আমি এর দায়িত্ব নেব না”।
আরও পড়ুন: করোনায় অতি স্পর্শকাতর হাওড়ায় সশস্ত্র পুলিশ নামানোর ভাবনা রণংদেহী মমতার
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের দুই বিজেপি সাংসদের এলাকা পরিদর্শন ঘিরে শুরু হয় অশান্তি। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা এবং জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়কেও গৃহবন্দি করে রেখেছে পুলিশ এমন অভিযোগও করা হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। এদিনের বৈঠকে নাম না করে সেই প্রসঙ্গ টেনেছেন মমতা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে, বামেদেরও উদ্দেশেও কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, "কিছু কমরেড বাহিনী গালাগাল দিয়ে যায়। তাঁদের তো কিছু করতে হয় না। জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছে। বিজেপির সঙ্গে ঘুরছে ওরা। প্রশাসন তার মতো কাজ করবে। এত ভয় কেন? জলপাইগুড়িতে বিজেপি বিএসএফ নিয়ে ঘুরছে”।
এরপরই মমতা বলেন, “দরকার হলে এসপি, ডিএম-কে চব্বিশ ঘন্টা কাজ করতে হবে। অনেকেই চাইছে সীমান্ত দিয়ে লোক ঢোকাতে। বাংলাকে ভাল থাকতে দেবে না।"
আরও পড়ুন: পুলিশদের পেটাচ্ছে, এবার নেতাদের পেটাবে, মানুষ ক্ষেপে গিয়েছে: দিলীপের হুঙ্কার
এদিন উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগণা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "উত্তর ২৪ পরগণায় সমস্ত সূত্রপাত হয়। কী ডেঙ্গু, কী করোনা!" সেখানকার জেলাশাসককে নির্দেশের সুরে মমতা বলেন, "ব্যারাকপুর, ভাটপাড়ার মতো এলাকাগুলিতে সবচেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। কীভাবে কমাবেন তা আপনারা জানেন। কিন্তু কমাতে হবেই।" উল্লেখ্য, ব্যারাকপুরের বর্তমান সাংসদ তথা ভাটপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক অর্জুন সিং তাঁর চলাফেরায় বাধাদানের অভিযোগ করেছেন দু’বার।
এদিকে, কলকাতার পড়শি জেলা হাওড়া নিয়েও চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "হাওড়া এখন খুব স্পর্শকাতর এলাকা হয়ে পড়ছে। মূলত শিবপুর, সাঁকরাইল এবং হাওড়া শহর এলাকায় ঝুঁকি বেশি। প্রয়োজনে হাওড়ায় বাজারের কাছে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী নামানো হতে পারে। হাওড়ার মতো একই ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে কলকাতার বিভিন্ন এলাকাতেও। গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হলে খুব বিপদ।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন