বিমানবন্দর থেকে হনহনিয়ে বেরিয়ে আসছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। একটু পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকা চমকে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখে-মুখে তখন বিস্ময়। 'দিদি'কে দেখে অভ্যর্থনা দিতে এগিয়ে যান ত্রিপুরায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরীয় পরানোর আগেই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে মমতার প্রশ্ন, মা মারা গেছেন! কবে? যাসনি? আমিতো জানি না!
Advertisment
মাতৃবিয়োগের দিনক্ষণ জানানোর পরই রাজীবের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, 'ফিরে যাসনি কেন? কে কাজ করবে? বাড়ি গিয়ে কাজ কর। মার বয়স কত হয়েছিল?'
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবের মাঝেই ভেঙে পড়েন শোকে কাতর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মাথা নিচু করে প্রিয় 'দিদি'র সামনে হাউ-হাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। সেই সময় দু'হাত বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রীর মাথায় দিয়ে সমবেদনা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীবের কাঁধে হাত দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথম ও দ্বিতীয় মমতা মন্ত্রিসভায় ঠছাঁই পেয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ২০২১ সালে প্রথমে মন্ত্রিত্ব, পরে দল ছাড়েন তিনি। বিজেপির টিকিটে ডোমজুড় থেকে লড়ে পরাজিত হন তিনি। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দিন বিধানসভা ভবন ছাড়ার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশাল ছবি হাতে করে নিয়ে বেরিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করেছিলেন, দলনেত্রী মমতা তাঁর কাছে মায়ের মতো। সেই মায়ের কোনও অবমাননা তিনি করতে পারবেন না। সে কারণেই ছবি নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
একুশের ভোটের পর গেরুয়া দলে বেশিদিন ছিলেন না রাজীব। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফিরে আসেন তৃণমূলে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিরে আসা নিয়ে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দেগেছিলেন। পরে রাজীবকে ত্রিপুরায় দলের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয় বাংলা থেকে।