বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব তৃণমূল। বকেয়া আদায়ে দিল্লি, কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ধর্নাও হয়েছে। কিন্তু এখনও কাজের কাজ হয়নি। আদৌ কি মিলবে বকেয়া? মঙ্গলবার লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যের বকেয়া অর্থ পেতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। মোদী সরকারের মন্ত্রীর পরামর্শ মানবেন মুখ্যমন্ত্রী? বুধবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার আগে গিরিরাজের পরামর্শ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানাতে চাই যে, বকেয়া নিয়ে এর আগে তিনবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। বেশ কয়েকবার চিঠিও দিয়েছি। সামনেই আমাদের দিল্লি চলো কর্মসূচি রয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি চেয়েছি। তার জন্য অপেক্ষা করছি। দেখা যাক তখন কি হয়।'
বকায় আদায় নিয়ে গত মাসেই নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বিশেষ অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'বকেয়া টাকার দাবিতে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে আমরা দিল্লি যাব। সব এমপিকে নিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাইব। জনগনের টাকা জনগণকে ফেরৎ দেওয়ার দাবি জানাব। যদি উনি সময় না দেন, তাহলে দিল্লির রাস্তায় ধর্নায় বসব আমরা। রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে।'
ভুয়ো জবকার্ড ইস্যুতে এদিন বিজেপিকে দুষেছেন মমতা। উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, 'কেন্দ্রের রিপোর্টই বলছে, ভুয়ো জব কার্ডের নিরিখে শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ। অথচ ওদের ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা হয়নি। বেছে বেছে শুধু বাংলার টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এটা ঠিক নয়।'
রাজ্যের একাধিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার গেরুয়া বাহিনী। এবার এই দুর্নীতির ইস্যুতেই পাল্টা বিজেপি শিবিরকে 'পকেটমার' বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'পকেটমাররাই বেশি পকেটমার, পকেটমার বলে চিৎকার করে। যেমন বিজেপি। বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে দেশবাসীর অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ওরা। আসলে ভোট এলেই বিজেপি এরকম ভাঁওতা দেয়।'
ভাইপো আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে শুধুই ব্যক্তিগত কাজে নয়, উত্তরের চার জেলায় সরকারি কর্মসূচিও রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরয। এ দিন তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকেই ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। কার্শিয়াঙে অনুষ্ঠান রয়েছে তাঁর। মিরিখে ত্রাণ বিলি করবেন। তারপরের দিন, অর্থাৎ ৯ তারিখ হাসিমারা হয়ে আলিপুরদুয়ার যাবেন। ১০ তারিখ আলিপুরদুয়ারে বৈঠক সেরে, ১১ তারিখ বানারহাটে পৌঁছবেন। সেখানে বৈঠকের পর ১১ তারিখ রাতেই উত্তরকন্যা ফিরবেন। ১২ তারিখ শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠান রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। ১২ তারিখই ফিরে আসবেন সমতলে।