স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে কাউকে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না, এদিন রাণাঘাটে দাঁড়িয়ে তা পরিষ্কার করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে।
রাজ্যের প্রতিটি পরিবারকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার উদ্যোগ যে অভাবনীয় এবং তা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যেই দুয়ারে সরকার প্রকল্পে বাংলার ২ কোটি মানুষ নাম নথিভুক্ত করেছেন। কিন্তু, ইতি-উতি অভিযোগ উঠছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের বিনিময়ে বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল পরিষেবা দিতে নারাজ। ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।
সোমবার এই প্রসঙ্গেই বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলোকে নিশানা করে কার্যত নির্দেশের সুরে তিনি বলেছেন, 'অনেক বড় বড় হাসপাতাল রয়েছে যারা বলছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চলবে না। তাদের বলছি এই কার্ড চালাতে হবে, পরিষেবা দিতে হবে।'
এরপরই চরম হুঁশিয়ারি দেন মমতা। বলেন, 'মনে রাখবেন বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের রয়েছে।' রোগী ও তাঁদের পরিবারের হয়রানি রুখতে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, 'যদি কোনও নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে তবে একটা এফআইআর করবেন। তারপর সরকার বুঝে নেবে।'
আপাতত মমতা সরকারের পাখির চোখ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। দুয়ারে দুয়ারে সরকার শিবিরের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে দিতে মরিয়া নবান্ন। তবে, এই কার্ডকে ভোটের আগে নির্বাচনী চমক বলে দাবি করছেন বিরোধী রানৈতিক দলগুলো। সেই প্রেক্ষাপটে এদিন বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি বেশ তাৎপর্যবাহী।
উল্লেখ্য, শনিবার নবান্নের সভাঘরে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড নিয়ে বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম–সহ অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা। সেখানেই ঠিক হয়েছে এবার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের জন্য তৈরি হবে পৃথক ডেস্ক। কোনও রোগী কার্ড নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এলে প্রথমে যোগাযোগ করবেন সেই ডেস্কেই। এখানেই শেষ নয়, দ্রুত বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বিমার টাকাও মিটিয়ে দেবে সরকার। তবে যতক্ষণ না তা মেটানো হচ্ছে, ততক্ষণ যেন কার্ড থাকা রোগীদের না ফেরানো হয়। বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে এমন আরজিও জানিয়েছে রাজ্য।
পরে ভার্চুয়াল বৈঠকে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মুখ্যসচিব নির্দেশ দেন, আরও বেশি সংখ্যায় নার্সিংহোমকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী সংক্রান্ত হেল্প ডেস্ক বাড়ানোর জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন