ঢাকঢোল পিটিয়ে জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী মহাজোটের সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়েছে পাটনা থেকে। মোদী সরকারকে উৎখাতে একসুর রাহুল, মমতা, নীতীশ, লালু, স্ট্যালিনদের। গত শুক্রবারের বৈঠকেই স্থির হয়েছে জুলাই মাসে বিরোদী দলগুলোর ফের বৈঠক হবে সিমলাতে। কিন্তু তার আগেই বিজেপি বিরোধী জোটের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। বাংলায় যে কংগ্রেস, সিপিএমকে তৃণমূল এক ছটাও জায়গা ছাড়তে নারাজ তৃণমূল তা সাফ বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারমঞ্চ থেকেই আগামী লোকসভা ভোটের ক্ষেত্র প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই সূত্রেই সোমবার কোচবিহারের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে উঠল বিজেপি বিরোদী মহাজোটের প্রসঙ্গ। একই সঙ্গে খোলসা করলেন বাংলায় ওি মহাজোটের সমীকরণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে, আগামী লোসভায় বিজেপিকে আমরা পরাজিত করব এবং দেশে একটি উন্নয়নমুখী সরকার গড়ব।' তবে, তাঁর চাঁচাছোলা বক্তব্য যে, 'দিল্লিতে আমাদের মহাজোট হবে। বাংলায় সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি জোট করেছে। ওদের পরাজিত করুন। এখানে আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব। আমরা বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে পরাজিত করব।'
শিক্ষক নিয়োগ থেকে আবাস কেলেঙ্কারি, তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ। পঞ্চায়েত ভোটে যা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে পারে রাজ্যের শাসক শিবির। বিলক্ষণ জানেন দলনেত্রী। সমস্যা মোকাবিলায় তাই পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারেই নেমেই দুর্নীতি দূরীকরণের ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কোচবিহারের প্রচার সভায় তাঁর প্রতিশ্রুতি, 'আমাদের দল তৃণমূল স্তরে আর দুর্নীতি হতে দেবে না।' তেইশের পঞ্চায়েত ভোট থেকেই চব্বিশের লোকসভার মঞ্চ প্রস্তুত করতে শুরু করেছে জোড়-ফুল শিবির। এই প্রেক্ষাপটেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করে বিজেপি বিরোধী জাতীয়স্তরের জোট নিয়ে মুখ খুলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেছেন যে, 'এখন পর্যন্ত আমরা পঞ্চায়েতকে তেমন গুরুত্ব দেইনি। এখন দেখছেন জনগণের মতামত চাওয়া হয়েছে। দুই মাস আগে মতামত চাওয়া হয়েছিল। কাউকে টাকা দেবেন না। আমরা চুরি হতে দেব না। কেউ টাকা চাইলে তার ছবি তুলে আমাকে পাঠান। আমরা এখন থেকে পঞ্চায়েত নিয়ন্ত্রণ করব। কাউকে চুরি করতে দেবেন না। আমরা জনগণের পঞ্চায়েত চাই।'
নাম না করেই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মমতার দাবি, 'একজন কোটি কোটি টাকা নিয়ে রাশিয়া-আমেরিকা যাচ্ছেন। কিন্তু কেন্দ্র বাংলার একশ দিনের প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। বারবার অনুরোধ করেও টাকা দিচ্ছে না। কেন্দ্র একশ দিনের কাজের জন্য সাত হাজার কোটি টাকা দেয়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়যুক্ত হওয়ার পরে তৃণমূল সেই অর্থ আদায় করবে।'
একুশের বিধানসভা ভোটে শীতলকুচিতে গুলি চলার প্রসঙ্গে টেনে পঞ্চায়েত বিএসএফের কাজে বড় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, 'আমার কাছে তথ্য আছে যে কিছু বিএসএফ আধিকারিক সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন, ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন এবং ভোট না দিতে বলছেন। আমি জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে নির্ভয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে বলছি। যদি বিএসএফ আপনাকে ভয় দেখায়, পুলিশকে খবর দিন। পুলিশ এফআইআর দায়ের করবে এবং আইন আইনের পথে চলবে।'