'ক্যাশলেস ইকোনমি' বা মুদ্রাহীন অর্থনীতি ইস্যুতে সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মোদী সরকারকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, মোদী সরকারের মুদ্রাহীন অর্থনীতি দেশে কর্মসংস্থানে ব্যর্থ হয়েছে। মোদী সরকারের সেই পথে না-হেঁটেই দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে আজ একনম্বর আসনে বাংলা। যা বুঝিয়ে দিয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অগ্রগতি কখনও মুদ্রাহীন অর্থনীতিতে চলতে পারে না। সম্মেলনে একথা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত ২০১৬ সালে মোদী সরকার ১,০০০ ও ৫০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করেছিল। সেই সময় থেকেই কেন্দ্র মুদ্রাহীন অর্থনীতির ওপর জোর দিয়েছে। বুধবার, ছিল দু'দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) সমাপ্তি দিবস। তারই সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মুদ্রাহীন অর্থনীতি ইস্যুতে কেন্দ্রকে নিশানা করেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'মুদ্রাহীন অর্থনীতি কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে না। ক'জন আর ডেবিট, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন? আমিই তো করি না!'
তা বলে, তিনি উন্নয়নের বিরোধী নন। সেকথাও অনুষ্ঠানে স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা কিন্তু, ডিজিটাইজেশনের বিরুদ্ধে নই। বরং লেখাপড়াটা ডিজিটাইজড হোক। কিন্তু অর্থনীতিকে মুদ্রাহীন করে দেওয়াটা ঠিক হবে না।' মুখ্যমন্ত্রী একথা বললেও মোদী সরকার গত কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল অর্থনীতির ওপরে জোর দিচ্ছে। গুগল পে, ফোন পে থেকে পেটিএম—সহ বিভিন্ন অ্যাপ, আর্থিক লেনদেনে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার বেড়েছে। বহু ব্যবহারকারীই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন করছেন। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রীয় বাজেটও 'পেপারলেস' করে দিয়েছে মোদী সরকার। গত কয়েক বছর ধরেই বাজেট পেশের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন চিরাচরিত লাল শালুতে মোড়া বাজেটের 'বই-খাতা' নিয়ে আর সংসদে ঢুকছেন না। বদলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর হাতে থাকছে ট্যাব।
আরও পড়ুন- পুরনো খেলায় ফিরল কলকাতা: সৌরভ এবার কার দলে?
পালটা বুধবার বাণিজ্য সম্মেলনে শিল্পে নগদ লেনদেনের গুরুত্ব বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, 'ক্ষুদ্র মানেই সুন্দর। নামে ক্ষুদ্র বলে তুচ্ছ ভাববেন না। বাংলার গ্রামে গিয়ে দেখে আসুন, কতজন মহিলা এই ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে কাজ করছেন। তাঁরা সংসার সামলাচ্ছেন। আবার নিজেরা উপার্জন করছেন। বাংলার গ্রাম থেকে শহরে যে সৃজনশীলতা আছে, সেটাই আমাদের শক্তি। এটাই আমাদের তৃতীয় নয়ন। যদি লক্ষ্য থাকে, তা হলে পথও তৈরি হয়ে যায়।'