মালদায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার গাজোলে সরকারি কর্মসূচি থেকে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুললেন মমতা। বললেন, "কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দেয় না অথচ সেন্ট্রাল টিম পাঠায়। আমাদের টাকাই আমাদের দিচ্ছে না। বাংলা থেকে করের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পাঠিয়ে অশ্বডিম্ব করছে। আমাদের টাকা নিয়ে রাজনীতি করছে কেন্দ্র।"
এদিন মমতা বলেন, "দিল্লির নেতারা বাংলায় এসে কুৎসা করে। প্রকল্পের টাকা দেয় না অথচ সেন্ট্রাল টিম পাঠায়। আমাদেরই টাকা আমাদের দেয় না। যাঁরা মিথ্যা কথা বলছেন তাঁরা এসে দেখে যান। উন্নয়নের কাজের জন্য একদিন বাংলাকে সেলাম জানাতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ করছে না। রাজ্যে যা কাজ আছে তাতে বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। কেন্দ্রীয় সরকার ভীষণ হিংসুটে।"
আরও পড়ুন অনুব্রতহীন বীরভূমে নয়া কোর কমিটি গঠন মমতার, ঢুকলেন দুই ‘কেষ্ট-বিরোধী’ নেতা
এর পর বিজেপিকে নাম না করে তোপ দেগে বলেন, "একটা উইপোকা কামড়ালেও এজেন্সি পাঠিয়ে গ্রেফতার করে নেয়। মাথায় উকুন হলে উকুন মেরে দিতে হয়। বাড়িতে ছারপোকা হলে সেই ছারপোকা মেরে দিতে হয়। মেরে দিতে বলতে আমি প্রাণে মারার কথা বলছি না।"
সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই এদিন তৃণমূল ত্যাগীকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে দুর্নীতির জন্য নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। বলেন, 'আমি একদিকে খুশি কারণ আমার দল থেকে কয়েকটা ডাকাত গদ্দাররা বিদায় নিয়েছে। এই ডাকাত গদ্দাররাই এইসব করেছিল। ওরা পুরুলিয়ার কোটাটাই কেটে দিয়েছিল। একসময় দেখলাম পুরুলিয়ার ছেলে-মেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না। মামনীয় আদালতকে দু'পাায়ে প্রণাম করে একবার বলব একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন- অন্যরা অন্যায় করলে নিশ্চই ব্যবস্থা নেবেন আমরা ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী। কিন্তু একবারও জেনেছেন যিনি আজ সর্বস্ব বিশারদ হয়ে বলে দিচ্ছেন ১০০ দিনের টাকা, আবাসন, রাস্তার টাকা দেবে না, যেন নিজের পকেটের টাকা দিচ্ছে। জনগণ করের মাধ্যমে সব টাকা দেয়। সব টাকা আপনি দেবেন আর ওরা মাছের তেলে মাছ ভাজবে।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তোলপাড় রাজ্য। আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। এই প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'যখন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল আমি তখন কোনওদিন কিছু বলিনি। কারণ আমার বলা শোভা পায় না আদালতে কেস চলছে। আমি আশা করি ভালো বিচার হবে। সাময়িকভাবে কেউ কাউকে ভুল বুঝতেই পারেন। তবে অন্যান করলে আমরা কেউ তার দায় নেব না। কিন্তু মনে রাখবেন পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েদের টোটাল বঞ্চিত করা হয়েছিল। পুরলিয়ার কোটা কেউ কেউ নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন। কীসের বিনিময়ে নাই বা বললাম। তারপর আমি বলললাম কেন পুরুলিয়া বঞ্চিত হবে। সব জেলারই একটা কোটা থাকে। ওখানকার ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছিল। তারপর আমি উদ্যোগ নিয়ে কোটা বাড়িয়ে ওদের কাজের ব্যবস্থা করে দিলাম।'