রাজভবন নবান্ন সংঘাত চরমে। ঝাড়গ্রাম থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে মুখ্যমন্ত্রীর বেনজির আক্রমণেই তা আরও একবার স্পষ্ট।
বুধবার ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের বকেয়া অর্থ না পাওয়া, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলাকে টাকা না দেওয়া, আবাস যোজনা নিয়ে এদিন আগাগোড়া মোদী সরকারকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে আক্রমণ শানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কোনও উপাচার্য নেই। নেই রেজিস্ট্রারও। কৃতী পড়ুয়ারা সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না। এ জন্য আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'আমি জানি ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেটা তরি হয়েছে আমাদের গভর্নর মহাশয়, তিনি এখন কালো চশমা পড়ে- সেটা অবশ্য তিনি পড়তেই পারেন একটার জায়গায় দশটা, জ্ঞান দিয়ে বেরাচ্ছেন। আমরা পাঠালেও করেনা। নিজের ইচ্ছামত কেরালা থেকে লোক এনে ঢুকি দিচ্ছে (উপাচার্য)। কেরালার অনেক বন্ধু আমার এখানে থাকে, তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে ভিুসি হতে গেলে ১০ বছর তাঁর প্রফেসর হিসাবে অভিজ্ঞতা থাকা উচিত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ভিসি করেছেন যিনি কেরালায় আইপিএস ছিলেন, যাঁর এডুকেশনের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। এখানে ঝাড়গ্রাম ইউনিভার্সিটি করেদিয়েছি। কিন্ত না আছে কোনও উপাচার্য, না আছে কোনও রেজিস্ট্রার। তার কারণ পাঠালেই উনি উনি ওনার মত বিজেপির একটা লোককে বসিয়ে দেবেন।' এরপরই মুখ্যসচিবকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ যে, ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনের জন্য উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে যেন অবিলম্বে তিনটি সুপারিশ করে দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'আমি সব করে দিচ্ছি, আর উনি (রাজ্যপাল) দালালি করে সব আটকে দিচ্ছেন। আমরা এটা মানবো না। স্ট্রেট মানবো না।'
এরপরই কার্যত রাজ্যপাল আনন্দ বোসকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতা বলেন, 'যদি আপনার সৎ সাহস থাকে যেটা বিধানসভায় পাস হয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী সব রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হবে তবে সেটা পাস করিয়ে দিন।'
আরও পড়ুন- স্বস্তি ‘কালীঘাটের কাকু’র, আদালতে আপত্তি প্রত্যাহার ইডি’র!
এদিনের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপালকে তাঁর করণীয় কী সেই বার্তাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, 'উনি পড়ুয়াদের ডেকে বলবেন দুর্নীতি কি? দাঙ্গা কাকে বলে? এটা রাজ্যপালের কাজ? না, রাজ্যপালের কাজটা সাংবিধানিক আসন। সংবিধানে তাঁর কাজ সীমাবন্ধ করা আছে। তিনি সবকিছু করতে পারেন না। গায়ের জোরে রাজ্যটাকে কিনে নিতে পারেন না তিনি।'
মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, 'উনি বলছেন যা মুখ্যমন্ত্রী করছেন আমিও তাই করবো। না আপনি তা করতে পারেন না। পারলে তাহলে একটা দল খুলুন আপনি। ভোটে লড়ুন। বিজেপির হয়ে জিতে আসুন। জিতে আসুন। কিন্তু জানি ওটা আগামী ১০০ বছরেও পারবেন না।'