জেলায় গিয়ে আচমকা পরিদর্শন করতেই অভ্যস্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে জেলাবাসীর কথা শুনছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম সফরে তেমনই ছবিই উঠে এসেছিল। বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ সমফরও তার ব্যতিক্রম নয়। এ দিন ইছামতীর বুকে লঞ্চে ঘুরছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুন্দরবন এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুরক্ষা সহ গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে খতিয়ে দেখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও তাঁর নজরে রয়েছে জেলার পর্যটন সম্ভাবনা। পরে স্কুল পরিদর্শন থেকে গ্রামবাসীদের বাড়িতে বসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন মমতা।
বুধবার সুন্দরবন সফরের দ্বিতীয় দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক কাজে নজর ছিল সবার। সকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে ছিল। নিরাপত্তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখে নেন আধিকারিকরা। সকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর গেস্ট হউসের সামনেই রাখা ছিল দুটি লঞ্চ। তাতে চেপেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইছামতীর বুকে ঘুরেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে ছিলেন সম্পর্কে তাঁর বৌদি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যান্য আত্মীয়রা। এছাড়াও রয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে ডিরেক্টর সিকিউরিটি পীযূষ পান্ডে, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর মনোজ ভর্মা, জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী, বসিরহাটের তৃণমূল বিধায়ক সহ অনেকেই।
জনসংযোগের অংশ হিসাবে বসিরহাটের নানা অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে এ দিন কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুনেছেন তাঁদের চাওয়া পাওয়ার বিষয়গুলি। শীতবস্ত্রও বিতরণ করেছেন। চক খাঁপুকুর প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন বাচ্চাদের লেখাপড়ার। দুপুরে হাসনাবাদের একটি গ্রামে গিয়ে স্থানীয় এক পরিবারের থেকে চ্যাংরা মাছ দিয়ে ভাত খান। সেখানেই তাঁর আশ্বাস, '২০২৪ সালের মধ্যে সুন্দরবন অঞ্চলের সব বাড়িতে নসবাহীত পানীয় জল পৌঁছবে। তবে আপাতত এক সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প পদ্ধতিতে জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।'
মঙ্গলবার হিঙ্গলগঞ্জের সভায় সরকারি আমলাদের তুলোধনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা শাসক থেকে বিডিও স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের কাজ নিয়ে তাঁকে মঞ্চেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল। তাঁর কেনা শীতবস্ত্র বিতরণের বদলে কেন বিডিও অফিসে রাখা হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী বক্তব্য মাঝপথে থামিয়েই বসে পড়েন তিনি। প্রায় মিনিট ১৫ চুপ করে বসেছিলেন তিনি। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে তটস্থ প্রশানিক কর্তারা।