সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছিল সিপিএম। বুধবার শিলিগুড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন দাবি তোলার পর রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। বাম থেকে বিজেপি, সব রাজনৈতিক দলই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে মমতার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে। কিন্তু নিজের অবস্থানেই অনড় রইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুর-টাটা নিয়ে আরও ঝাঁঝাল মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার শহরে কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে বললেন, "আমি কাল একটা কথা বলেছিলাম। তা নিয়ে বিজেপি, সিপিএম নানা কথা বলছে। আরে টাটার তো আমাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপনও করেছিল। যাতে সিপিএম সরকারের লাভ হয়। জোর করে কৃষকদের জমি কেড়েছেন, তাপসী মালিককে পুড়িয়ে মেরেছেন।" এদিন মমতা বোঝাতে চান, শিল্পায়নে তিনি বা তৃণমূল বাধা দেয়নি। তাঁদের শুধু দাবি ছিল, জোর করে জমি অধিগ্রহণ চলবে না। পরে সিঙ্গুর মামলায় মমতার সরকারই জেতে সুপ্রিম কোর্টে। হার হয় টাটা গোষ্ঠীর।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা স্পষ্ট করে বলেছিলাম যেখানে জমি পড়ে আছে সেখানে করুন। ৩৪ বছর তো সরকারে ছিলেন। কী করেছ, গত ১১ বছরে বাংলা যে কাজ হয়েছে, তা দেখে লুচির মতো ফুলছ। তোমরা ফানুসের মতো ফুলবে, ফানুসের মতো উড়বে।"
আরও পড়ুন ন্যায্য আন্দোলনকারীদের ভালোবাসি-কিন্তু পুরোটা জানি না: মমতা
এদিকে, সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মমতার বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন, ‘শুধুমাত্র সিপিএমের জন্য টাটা চলে গেছে এটা আমি বিশ্বাস করি না। সিঙ্গুর আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আমাদের সবার ধরনার জেরেই টাটারা রাজ্য ছেড়ে চলে যায়।’
কেন হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তৎকালীন শাসক সিপিএমের জন্য টাটারা রাজ্য ছেড়েছিল? মাস্টারমশাইয়ের যুক্তি, ‘তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর সামনে শাসক ও আন্দোলনকারীদের যে চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। সম্ভবত সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিপিএম টাটাদের তাড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন ‘সৌরভ ভদ্র বলে মুখ বুজে সহ্য করেছে’, বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা
তবে মমতার কথার যুক্তি মানতে নারাজ তিনি। বলেছেন, ‘কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঠিক বলছেন না। কারণ, সেই চুক্তির কপি কখনও টাটাদের কাছে পৌঁছয়নি। কারখানার গেটের সামনে ঘটে যাওয়া একের পর এক ঘটনার জেরেই টাটারা সিঙ্গুর ছেড়েছিল।’