নিজে কিনে হিঙ্গলগঞ্জের মানুষের জন্য শীতবস্ত্র পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের সমাবেশে সেইসব নিজে মানুষের হাতে তুলে দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মঞ্চে উঠেই নিজের কিনে দেওয়া শীতবস্ত্র বন্টনের জন্য সেগুলোর খোঁজ করেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'আমি এখানে আসব বলে গত তিন দিন ধরে কেনাকাটা করেছি। ৫ হাজার সোয়েটার, ৫ হাজার চাদর ও ৫ হাজার কম্বল এনেছি। মোট ১৫ হাজার জিনিস আপনাদের জন্য এনেছি।'
Advertisment
একেবারে জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদীর মুখ ঘুরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সটান জানতে চান, 'যেগুলো এনেছি ওই জিনিসগুলো কি ওদের দেওয়া হয়েছে?' জবাবে জেলা শাসক বলেন, 'এখনও হয়নি।' যা শুনেই রেগে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতিমত স্বর চড়িয়ে বলেন, 'কেন দেননি? ওগুলো কোথায় রেখেছেন?পরিস্কার করে বলুন।' উত্তরে জেলা শাসক হকচকিয়ে বলেন, 'বিডিও অফিসে সেগুলো রয়েছে।' পরক্ষণেই মমতা বলেন, 'না, বিডিও অফিসে কেন থাকবে? আমি ওগুলো এখানকার জন্য শুধু এনেছিলাম। যাও নিয়ে এসো। আমি তোমার থেকে এসব আশা করিনি।'
প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মাইক হাতে বলতে থাকেন, 'জিনিস দিলেও যদি না পৌঁছয় তা হলে আমার গায়ে খুব জ্বালা ধরে। প্রশাসন ভুল করলে তো আমাকে মানুষের কথা শুনতে হয়। পুলিশ দোষ করলে আমাকেই দায়ী করে মানুষ।' বেগতিক বুঝে ততক্ষণে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বিডিও, আইসি, জেলা শাসকরা ঠিক মতো কাজ না করলে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সভাজুড়ে এইসময় উচ্ছ্বাসের বন্যা। গরম গরম কথায় উত্তাল মানুষ। মঞ্চে তখনই জনতাকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওই জিনিসগুলো আপনাদের বিতরণ করা না হওয়া পর্যন্ত কেউ এখান থেকে যাবেন না। আমিও এখান থেকে যাব না।' এ কথা বলে চেয়ারে গিয়ে বসে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী।
ঘটনার আধঘন্টা পরে শীতবস্ত্র আসে। তবে তার আগেই শান্ত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মঞ্চে ডেকে বেশ কয়েকজনকে নিজের কেনা শীতপোশাক বিতরণ করেন।